শুক্রবার

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩ পৌষ, ১৪৩২

ওসমান হাদীকে হত্যার প্রতিবাদে কুবিতে বিক্ষোভ

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০২:০৭

শেয়ার

ওসমান হাদীকে হত্যার প্রতিবাদে কুবিতে বিক্ষোভ
সংগৃহীত ছবি

"আমরা সবাই হাদী হবো‚ যুগে যুগে লড়ে যাবো" বিক্ষোভ মিছিলে কুবি শিক্ষার্থীরা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদীকে আওয়ামিলীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে-(কুবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।

‎বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে মিছিল নিয়ে তারা ক্যাম্পাসের ভেতর প্রবেশ করে বিজয় ২৪ হলের সামনে প্রদক্ষিণ করে।

‎এসময় তারা শ্লোগানে বলেন—‘আমরা সবাই হাদী হবো‚ যুগে যুগে লড়ে যাবো; শহীদ হাদী লও সালাম; ভারতীয় আগ্রাসন‚ ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও; নারায়ে তাকবীর‚ আল্লাহু আকবার; দিল্লী না ঢাকা‚ ঢাকা-ঢাকা; গোলামি না আজাদি, আজাদি-আজাদি।’

‎বিক্ষোভ মিছিল থেকে শিক্ষার্থীরা নতুন ক্যাম্পাসে শরীফ ওসমান হাদির নামে হল তৈরির দাবী জানিয়েছেন৷ এছাড়াও ছাত্রলীগসহ শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় মদদদাতা তৎকালীন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য কাজী ওমর সিদ্দিকী, আবু ওবায়দা রাহিদ, অমিত দত্ত ও লোক প্রশাসন বিভাগের রশিদুল ইসলাম শেখসহ সকল আওয়ামি পন্থী শিক্ষকদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন।

‎বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা হাদি হত্যার বিচার ও ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। এই সময় শিক্ষার্থী আবসার উদ্দিন ইফতি বলেন‚ ‘হাদির কণ্ঠস্বর ছিলো ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কন্ঠস্বর। হাদির কণ্ঠস্বর ছিলো বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্বের কণ্ঠস্বর। ভারত বিভিন্নভাবে হাদির কণ্ঠস্বরকে রুখে দিতে চেয়েছে। আপনারা কি মনে করেন হাদি মারা গেছে? বাংলাদেশের ভারতীয় আধিপত্যাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই যতদিন থাকবে, আবরার ফাহাদ ততদিন থাকবে, ওসমান হাদি ততদিন থাকবে। আমরা গ্রামে গ্রামে হাদি তৈরি করবো, আবরার ফাহাদ তৈরি করবো। হাদির কণ্ঠকে আমরা পাঠ্য বইয়ে চাই৷ আমাদের লড়াইটা হবে বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই। আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মকে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী বানাবো।’

‎মোহাম্মদ লাবিব বলেন‚ ‘এক হাদি থেকে আমরা লক্ষ হাদি হবে। আপনারা বিভিন্ন দল থেকে এসেছেন, বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন আপনারা শহীদ হাদিকে ছড়িয়ে দিন। কালচারালি গড়ে উঠেন, ইকোনমিক্যালি গড়ে উঠেন। যাতে ইন্ডিয়া আগামী দশ বছর পর আমাদের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হয়।’

‎শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন‚ ‘আমরা আজকে জুলাইয়ের অগ্রনায়ক শহীদ শরীফ ওসমান হাদী ভাইকে হারিয়েছি। লীগের পুনর্বাসন আর বাংলাদেশে হবে না। তোমাদের আর কোন সুশীলতা, আর কোন হুমকি ধামকির পরোয়া করবো না। আওয়ামী লীগকে আমরা আর ছাড় দিবো না। এক হাদীকে হারিয়েছি, লক্ষ্য হাদি আজ দাঁড়িয়ে আছে। সবাই লীগের বিরুদ্ধে, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান তোলছে। যতদিন হাদি ভাইয়ের খুনীদের বিচার হবে না ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়বো না।

‎ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হোসেন আবির বলেন‚ ‘আল্লাহ কোরআনে বলেছেন শহীদদের মৃত না বলতে। আমরা হাদি ভাইয়ের জন্য দোয়া করি। আমরা লক্ষ্য করেছি জুলাইয়ের দেড় বছর পার হয়ে গেলেও কোন বিচার পাইনি। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা আমাদের উপর হামলা করেছে, যেসব শিক্ষক কুলাঙ্গাররা পুলিশকে লেলিয়ে দিয়ে আমাদের উপর হামলা করেছে তাদেরকে প্রশাসন বিচারের আওতায় না এনে পদোন্নতি দিয়েছে। আমরা চুপ করে থাকলেও তারা তাদের সন্ত্রাসি পায়তারা থামায়নি। তারা গুপ্ত হামলা করছে৷ জুলাইয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সারাদেশে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়েছিলো। আমরা এখান থেকে ঘোষণা করতে চাই বাংলাদেশে আর কোন সুশীলতা চলবে না৷ প্রত্যেককে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’



banner close
banner close