অনিয়মের অভিযোগ এনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক নিয়োগ বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরী। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে চিঠির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ আব্দুল কাইয়ুম চত্বরে এ মানববন্ধন করে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা "বহিরাগতদের দাদাগিরি, চলবেনা চলবেনা "কুবিয়ানদের এক দাবি শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে", "সেশন জট আর নয়, আর নয় আর নয়", "এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন" সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এছাড়াও, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট নিরসনে প্রকাশিত সার্কুলার অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ প্রদান এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই কুকসু নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ শিক্ষক নিয়োগে বাধাগ্রস্ত করছে এবং তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (কুকসু) নির্বাচনও নির্ধারিত সময়ে না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে ফার্মেসি বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান সাদী বলেন, “আমরা গত এক বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য চিঠি, স্মারকলিপি এবং আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি জানাচ্ছি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) পর্যন্ত আমাদের আবেদন পৌঁছেছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। বর্তমানে মাত্র পাঁচজন শিক্ষক নিয়ে পুরো বিভাগের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রতিটি ব্যাচের জন্য একজন শিক্ষক থাকা প্রয়োজন, যেখানে প্রতি ২৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকা বাধ্যতামূলক। যদি আমাদের শিক্ষক নিয়োগে কোনো বাধা সৃষ্টি করা হয়, আমরা কঠোর অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার পর্যন্ত যেতে বাধ্য হব।”
লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহানুল ইসলাম সোহান বলেন, “আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রায়ই সেশন জটের সমস্যায় ভুগছে। অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে।”
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফারুক নাহিয়ান বলেন, “আজকে যে বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা বলেনি, সেটা হলো শিক্ষক রাজনীতি। গত ফ্যাসিস্ট আমলে শিক্ষক সমিতি এবং তৎকালীন ভিসির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম ছয় মাস সেশনজটে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ছিল। এটার কারণ যদি লক্ষ্য করা যায়, দেখা যায় দু’পক্ষই অনৈতিকভাবে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি করেছে এবং আমাদের ভুক্তভোগী করেছে।
তিনি আরো বলেন, "আমরা হাসিনার আমলে বিভিন্ন গ্রুপ দেখেছি, সেগুলো আমরা দমন করেছি। এখনো কিছু গ্রুপ লক্ষ্য করছি। আপনাদের দমন করতে আমাদের বেশি সময় লাগবে না।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, "যে যাই বলুক, যোগ্যতা ছাড়া কোনো মাপকাঠিতে নিয়োগের পক্ষে আমি না। উচ্চ সিকিউরিটির মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। ফার্স্ট ডিসেম্বর থেকে চব্বিশ ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করছি।"
আরও পড়ুন:








