জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন নরসিংদীর কাজী আরিফ। তিনি শিবির সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচ তলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম সাদ্দাম ও জবি শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম যৌথভাবে প্যানেলটি ঘোষণা করেন।
কাজী আরিফের গ্রামের বাসা নরসিংদীর শেখেরচর। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ (১৭ ব্যাচ) সেশনের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। রাজধানীর তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেছেন। বর্তমানে আরিফ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হাফেজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং বিজ্ঞান অনুষদে শিবিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলা এডিশনের সঙ্গে আলাপে কাজী আরিফ তাঁর ছাত্র রাজনীতিতে আসার কারণ ও লক্ষ্য তুলে ধরেন। আরিফ জানান, ২০১৬ সালে ছাত্রশিবিরে যুক্ত হন এবং তাঁর পারিবারিক পটভূমি মাদরাসা হওয়ায় ২০১৩ সালের ৫ই মে'র ঘটনায় তার পরিবারের লোকজন আহত হয়েছিল।
তিনি বলেন, 'ফ্যাসিস্টবিরোধী লিগ্যাসি আমার আগে থেকেই ছিল। অতঃপর শিবিরের মাধ্যমে এটাকে নিজের মিশন হিসেবে ঠিক করি। আমার সামগ্রিক অ্যাক্টিভিজমে হাসিনার পতনই ছিল আমার একমাত্র ইচ্ছা।'
কাজী আরিফ জুলাই আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'জুলাই আন্দোলনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ময়দানে ছিলাম। পুরো জুলাইজুড়ে লড়ে গেছি কোনো প্রকার প্রচারনা ছাড়া। জগন্নাথের সব আন্দোলনে ছিলাম। যমুনায় দুই রাত পাহারায় ছিলাম ছাত্রশিবিরের ভাইদের সাথে।' তিনি সচিবালয় ঘেরাও আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন বলেও জানান।
শিবিরের প্যানেলে নির্বাচন করার কারন হিসেবে জানান, 'শিবিরের প্যানেলকে বেছে নেওয়ার কারণও সেটাই, যেটা শিবিরে যোগ দেওয়ার কারণ ছিল। ২০১৬ সালে শিবিরের ভয়াবহ একটি সময় ছিল। শাপলা চত্বরে নিহতদের পরিবার ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে ফ্যাসিস্টবিরোধী ভূমিকা রেখেছে। সেই সময়ই আমি শিবিরের সাথে যুক্ত হয়ে নিজের মিশন স্থির করি।'
নির্বাচনে জয়-পরাজয় প্রসঙ্গে কাজী আরিফ বলেন, 'জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। জকসুকে আমি পূর্বের আন্দোলনের প্রতিদান হিসেবে না দেখে বরং দায়িত্ব হিসেবে দেখি। সেক্ষেত্রে জয় হওয়া মানে আমার ওপর দায়িত্বের চাপ বেড়ে যাওয়া।' তিনি বিষয়টি শিক্ষার্থীদের হাতেই ছেড়ে দিতে চান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা অনেক। এমন কোনো প্রার্থী নেই, যারা সমস্যাগুলোকে এড্রেস করছে না। বিষয় হলো— বাস্তবভিত্তিক ইশতেহার আসলেই তারা দিচ্ছে কি-না? এটুকু বলতে পারি, কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলে সবার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করব।'
কাজী আরিফ এখনো তার পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন নি। খুব শীঘ্রই তা ঘোষণা করবে বলে জানান।
প্রসঙ্গত, গত ৫ নভেম্বর ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ১২ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলে মোট ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়। ১৯ ও ২০ নভেম্বর বাছাই, ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৪–২৬ নভেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি সম্পন্ন হবে। ২৭ ও ৩০ নভেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট এবং ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে, যা পরদিন (৯ ডিসেম্বর) প্রকাশ করা হবে। এরপর ৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে নির্বাচনী প্রচারণা। ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ ও সেদিনই ভোট গণনা সম্পন্ন হবে। ২২ থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন:








