জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হওয়া অনিক কুমার দাস। তিনি ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্যানেলটি ঘোষণা করেন।
অনিক কুমার দাস জুলাইের গনঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারির যোদ্ধা ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ঢাকার সিএমএম কোর্টের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার খাদ্যনালী ভেদ করে শরীরের অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর ৩১ জুলাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জোর করে বের করে দেয়। পরে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১১ আগস্ট তাকে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে থাকা অবস্থাতেই তিনি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিজের ভূমিকা সম্পর্কে অনিক বাংলা এডিশনকে বলেন, 'আন্দোলনের প্রথম দিন থেকেই উন্মুক্ত লাইব্রেরি থেকে আমরা কার্যক্রম শুরু করি। পরে ১১ জুলাই সিনিয়রদের সরে যাওয়ার ঘোষণার পর আমরা কয়েকজন নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট ভেঙে শাহবাগে পৌঁছাই। ১৪ ও ১৫ জুলাই পুলিশের ব্যারিকেড পেরিয়ে টিএসসিতে অবস্থান নিই, সেদিন ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলারও শিকার হই। ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে এগোতেই সিএমএম আদালতের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বন্দুক দিয়ে হামলা করে। পাল্টা ধাওয়া দিতে গেলে একটি গুলি এসে আমার পেটে লাগে। এরপর টানা তিন মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছি।'
ছাত্রদলের প্যানেলে যুক্ত হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, 'ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা, জবিকে নিয়ে তাদের ইতিবাচক চিন্তা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।'
নির্বাচনে জয়-পরাজয় প্রসঙ্গে অনিক বলেন, 'এটা সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের বিশ্বাসের বিষয়। আমি সবসময় তাদের ন্যায্য দাবির পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি, বাকিটা তারা সিদ্ধান্ত নিবে।'
বিজয়ী হলে করণীয় সম্পর্কে তিনি জানান, 'শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাই হবে প্রথম দায়িত্ব। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ২০২৪-এর ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিরোধী গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাবো, যেন ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচারী শক্তি শিক্ষাজীবন বিপন্ন করতে না পারে।'
আরও পড়ুন:








