পুরুষ শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমের বরখাস্তের দাবিতে আলটিমেটাম দিয়েছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। আগামী ২ দিনের মধ্যে যৌন হয়রানি ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন এবং তার আলোকে আগামী ৪ দিনের মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার করা না হলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচীতে যেতে পারে।
শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এই হুঁশিয়ারী দেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশ্বাস দেন, তাদের দাবি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে জানাবেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান সাপেক্ষে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদের উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আগামী ২ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন এবং ৪ দিনের মধ্যে তাকে (অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিম) বহিষ্কার করা না হলে, আমরা ল্যাব-ক্লাস বর্জন করব। শুধু ল্যাব-ক্লাস বর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না, পাশাপাশি পাশাপাশি সকল বিভাগের প্রতি আহ্বান জানাবো তারা যেন ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট করেন।
পরে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বিরত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
পরে প্রক্টরের আশ্বাসে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে অবস্থান কর্মসূচি ত্যাগ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে সন্ধ্যায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমের ‘বিকৃত যৌনাচারের’ দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
এতে সংহতি জানিয়ে ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, ‘একটি ক্রিমিনাল যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্রাইমে অভিযুক্ত হয় এবং প্রমাণিত হয়, তখন দুটি জায়গা থেকে তার মৌলিক শাস্তি আসা উচিত। একটি হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আরেকটি রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দুই জায়গাতেই আমরা যথেষ্ট গাফিলতি লক্ষ্য করেছি। শুধু গাফিলতি নয় ইনটেনশনালি তারা বিষয়টি ইগনোর করছে।
জরুরি সিন্ডিকেট আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্তের দাবি জানিয়ে ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মাদ বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাব, জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠক ডেকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।
এর আগে ১৩ নভেম্বর রাত প্রায় ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের বেশ কয়েকজন পুরুষ শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ শেওড়া পাড়া থেকে বিভাগটির অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমকে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে হেফাজতে নেয়। পরে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর মামলার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতে পাঠানো হয়। পরে ১৪ নভেম্বর বিকালে শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম।
আরও পড়ুন:








