গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) বাংলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ ছাড়াই ক্লাস নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর্কাইভসের সহকারী গবেষক খাদিজাতুল কুবরা মিম গত ২৯ অক্টোবর থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিভাগটিতে শ্রেণিকার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ বিষয়ে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক মনসুর মুসার তত্ত্বাবধানে ‘আপদকালীন সময়’ দেখিয়ে মিমকে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। ইউজিসির নিয়োগ বিধি ছাড়াই বাংলা বিভাগের ৩টি সেমিস্টারে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।
খাদিজাতুল কুবরা মিম বলেন, 'কবিতা (কবিসতারা খাতুন) ম্যাম অসুস্থ থাকায় বিশেষ প্রয়োজনে আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই নিয়োগটাতে মূলত প্রাথমিক ভাবে ক্লাস নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ নিয়োগের বিষয়ে আমি আগে থেকে অবগত ছিলাম না প্রশাসন থেকে আমাকে ক্লাস নেয়ার জন্য একটি চিঠি দেয়া হয় এর পর থেকে আমি ক্লাস নিচ্ছি।'
নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম দেলোয়ার হুসাইনের অবর্তমানে বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন অধ্যাপক মনসুর মুসা। ঠিক তখনই বিভাগে শিক্ষক সংকট উল্লেখ করে খাদিজাতুল কুবরাকে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি প্রদানের জন্য প্রশাসন বারাবর চিঠি লেখেন তিনি। পরবর্তীতে খাদিজাতুল কুবরাকে নিয়োগ বিধি ছাড়াই 'আপদকালীন' সময় দেখিয়েই ক্লাস নেওয়ানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক মনসুর মুসা জানান, 'মীম (খাদিজাতুল কুবরা) কোনো অফিসিয়াল দায়িত্বে নেই। সে শুধু ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর্কাইভ'সের দায়িত্বে আছেন। তার ক্লাস নেওয়ার যোগ্যতা আছে। শিক্ষিকার (কবিসতারা খাতুন) অনুপস্থিতিতে মানবিক জায়গা থেকেই তাকে ক্লাস নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, মানবিক জায়গার কথা বলা হলেও প্রভাষক কবিসতারা খাতুনের দীর্ঘ অসুস্থতায় অথবা শিক্ষক সংকট দেখিয়ে কোনো নিয়োগের আবেদন আসেনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে।
তবে খাদিজাতুল কুবরার নিয়োগের ব্যপার অজানা বলে জানিয়েছেন কলা অনুষদের ডিন নিলুফার সুলতানা। তিনি বলেন, "আমাদের কোনো বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। নতুন কোন শিক্ষক যদি ক্লাস নিয়ে থাকে তাহলে আমি এই বিষয়ে অবগত নই।"
নিয়োগ ছাড়াই কোনো মারফত দেখিয়ে যে কেউ-ই ক্লাস নিতে পারবেন কিনা এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আবুল হোসেন বলেন, "খাদিজাতুল কুবরা মিমকে কোনো আনুষ্ঠানিক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বিভাগে শিক্ষক জনিত সংকট জানিয়ে অধ্যাপক মনসুর মুসা তাকে (খাদিজাতুল কুবরা) ক্লাস নেওয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে জানিয়েছেন। 'আপদকালীন সময়ে' তাকে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এ কাজে তাকে কোনো আলাদা বেতন-ভাতা দেওয়া হবেনা। এবং বিভাগ থেকেও শিক্ষক স্বল্পতার জন্য নতুন নিয়োগের জন্যও আবেদন জানানো হয়নি।'
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "যে কোনো বিভাগেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসলে তা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়, যথাযথ নিয়ম মেনেই সে অনুযায়ী নিয়োগ সম্পন্ন হবে।"
আরও পড়ুন:








