কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসে আলোচনা সভা ও পোস্টারিং কার্যক্রম চালিয়েছে কুবি শাখা ছাত্রদল।
এর প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা রবিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় মানববন্ধন করে। মানববন্ধন ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতিক কার্যক্রম ও প্রশাসনের অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট ব্যাখ্যা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে স্মারকলিপি দেন তারা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০তম সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কুবি হবে রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে গত শনিবার (৮ নভেম্বর) মুক্তমঞ্চে ছাত্রদল প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই আলোচনা সভা আয়োজন করে। একই সঙ্গে মূল ফটক ও বিজয় ২৪ হলে পোস্টারিং করে।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বায়জিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি ক্যাম্পাস। এখানে কোনো রাজনৈতিক ব্যানারে কার্যক্রম চালানোর অধিকার কারও নেই। কিন্তু গতকাল আমরা মুক্তমঞ্চে ছাত্রদলের কার্যক্রম দেখেছি। প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা যদি সমঝোতা করতে চায়, সেটা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিক, নইলে আইন বাস্তবায়ন করুক।’
বক্তব্যে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারুক আল নাহিয়ান বলেন, ‘নামে-বেনামে যারাই রাজনীতি করবে, আমরা তার বিরোধিতা করি। ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাহত করে। প্রশাসন রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করলেও বাস্তবে তা কার্যকর করতে পারছে না।’
এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী সায়েম মোহাইমিন বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনীতি থাকবে, কিন্তু কুবির ৫০ একরের ভেতরে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম আমরা চাই না। অতীতে রাজনীতির কারণে এক শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন, অনেককে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। আমরা চাই কুবি রাজনৈতিক আধিপত্য থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকুক।’
স্মারকলিপি জমা নেওয়ার পর প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘গতকাল যে প্রোগ্রামটি আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি, সেটির জন্য প্রক্টরিয়াল বডির কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এতে করে কোনো বিশৃঙ্খলার দায়ভার প্রশাসন নেবে না। আমরা বারবার রিকুয়েস্ট করেছি, ১ম ও ১০০তম সিন্ডিকেটে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কুবি হবে রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত ক্যাম্পাস। তবুও কিছু ঘটনা অগোচরে ঘটছে।’
নিয়ম ভঙ্গের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামী সিন্ডিকেট সভায় এই বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। যারা নিয়ম ভঙ্গ করেছে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত ১৫ বছর ধরে এ ধরনের কার্যক্রম চলেছে, বিষয়টি সঠিকভাবে সমাধান করতে কিছুটা সময় লাগবে।’
আরও পড়ুন:








