রবিবার

২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩ পৌষ, ১৪৩২

কুবিতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ: উন্মুক্তের দাবিতে ছাত্রদলের স্মারকলিপি

‎কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:১০

শেয়ার

কুবিতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ: উন্মুক্তের দাবিতে ছাত্রদলের স্মারকলিপি
ছবি: বাংলা এডিশন

রাজনীতিমুক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল। রবিবার (২ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁরা।

স্মারকলিপিতে ছাত্রদল জানায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থী সংসদ চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত ১০০তম সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত বাতিল না করে সংসদ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া প্রশ্নবিদ্ধ। রাজনীতি করা কিংবা সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটানো প্রতিটি শিক্ষার্থীর সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু ২০২৪ সালের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতির ন্যায় আমরা এখনো ক্যাম্পাসে বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থেকেও শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘একটি সুন্দর, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু শিক্ষার্থী সংসদ গঠনের প্রধান শর্ত হলো ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা কিন্তু বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিবেশ নেই।

ছাত্রদলের দাবি করে, শিক্ষার্থী সংসদ গঠনের আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে এবং সক্রিয় সব ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম উন্মুক্ত রাখতে হবে। তারা অভিযোগ করেন, রাজনীতি নিষিদ্ধ রেখে ও অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মতামত উপেক্ষা করে প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিচ্ছে।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, "২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর যে-সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংসদ গঠিত হয়েছে, সেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় ছিল এবং সব পক্ষের মতামত নিয়ে সংসদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ওই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ টেনে তারা বলেন, ‘সেখানে প্রশাসন সংসদ গঠনের আগে ছাত্ররাজনীতি উন্মুক্ত করেছে, কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার উলটো চিত্র দেখা যাচ্ছে।"

এছাড়াও কুবি ছাত্রদল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদের (কুকসু) খসড়া গঠনতন্ত্র নিয়ে তাদের কিছু সংস্কারমূলক প্রস্তাব রয়েছে। তারা প্রশাসনের সঙ্গে একটি সম্মিলিত বৈঠকের মাধ্যমে এ প্রস্তাবনা উপস্থাপনের সুযোগ চায়।

শেষে দলটি ছাত্রসংসদ সংক্রান্ত যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের আগে ক্যাম্পাসে রাজনীতি উন্মুক্ত করে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এবং সকল ছাত্র প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানায়।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছি। কুকসু হোক আমরাও চাই। ৫ তারিখের পর থেকে দীর্ঘ সময় স্যারদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেছি, রাজনীতির স্বাধীনতা উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য। সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো যেন স্বাধীনভাবে নিজের ব্যানারে কাজ করতে পারে। উনারা ২-৩ মাস, ৪ মাসসময় নিচ্ছিলো। কিন্তু দেখা গেলো দেড় বছর পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোন কাজ করতে পারছি না নিজেদের ব্যানারে।

তিনি আরও বলেন ‘যেহেতু সামনে কুকসু হবে, শিক্ষার্থীদের জন্য তো কাজ করতে হবে। সেজন্য আমরা আবেদন জানিয়েছি কুকসু-কে সামনে রেখে আমাদের রাজনীতিকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য। তারা যদি সকলের সহাবস্থান নিশ্চিত করে, তাহলে সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরি হয়। যার কারণে আমরা আবেদন জানিয়েছি খুব দ্রুত রাজনীতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য। আর গঠনতন্ত্র বিষয়ে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ রেখে কুকসু চালু করা তো এক প্রকারের দ্বিচারিতা। রাজনীতি ওপেন থাকুক, পাশাপাশি কুকসুর কার্যক্রমও, তাহলে দুইটাই নেওয়া গেলো। কারণ আমরাও তো প্যানেল দিতে হবে। আপনি যদি আমাদের হাত পা বেধে রেখে ছাত্র সংসদ দেন আমাদেরও তো কাজ করতে হবে।



banner close
banner close