সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩ পৌষ, ১৪৩২

আনন্দ-উচ্ছ্বাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

জবি, প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৪১

শেয়ার

আনন্দ-উচ্ছ্বাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
ছবি: বাংলা এডিশন

ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আনন্দ-উচ্ছ্বাসে উদযাপন করা হয়েছে। স্কুল থেকে কলেজ, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া প্রতিষ্ঠানটি সফলতার ২০ বছর পেরিয়ে ২১ বছরে পদার্পণ করেছে। দিনটি উপলক্ষে আয়োজন করা হয় আনন্দ র‌্যালি, চারুকলা প্রদর্শনী, মেলা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচি।

সোমবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম। পরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

প্রতিবছর ২০ অক্টোবর ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’হিসেবে পালিত হলেও, এ বছর কালীপূজা বা শ্যামাপূজার ছুটির কারণে তা দুই দিন পিছিয়ে ২২ অক্টোবর উদযাপন করা হয়। তবে জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশ করে উৎসব আরও পাঁচ দিন পিছিয়ে ২৭ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল— 'ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান, স্বপ্নে জয়ে অটল প্রাণ।'

উদ্বোধনের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় ও ভিক্টোরিয়া পার্ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়।

পরে সকাল সাড়ে ১০টায় শহিদ সাজিদ ভবনের নিচতলায় চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ‘বার্ষিক শিল্পকর্ম ২০২৫’শীর্ষক চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্র স্থান পায়, যা উপস্থিতদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

দুপুরে বিজ্ঞান ভবন প্রাঙ্গণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, 'গত এক বছরে দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা শিক্ষা ও গবেষণামূলক কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করতে পেরেছি। আমাদের অর্জন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাই ভালোভাবে অবগত। আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বাজেট ছিল অত্যন্ত সীমিত; বর্তমানে সেই বাজেট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গবেষণা সপ্তাহ’আয়োজন করা হবে, যা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ের জন্য গবেষণায় উৎসাহ জোগাবে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন সময়সাপেক্ষ হলেও আমরা এই সমস্যার সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করছি; আশা করছি আগামী বছরের মধ্যে আংশিক সমাধান সম্ভব হবে।'

এসময় ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, 'আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করে যাবো—এই প্রত্যাশাই আজকের দিনে আমাদের সবার অঙ্গীকার হওয়া উচিত। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে ইতোমধ্যে আংশিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, এবং আরও বিস্তৃত সমাধানের জন্য কাজ চলছে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, নিষ্ঠা ও সহযোগিতাই জবিকে আরও সমৃদ্ধ, আধুনিক ও গৌরবময় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে।'

এসময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন অনুষদ, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রভোস্ট, প্রক্টর, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



banner close
banner close