সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩ পৌষ, ১৪৩২

চবির আবাসিক হলে মাদকের আসর

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১৪:৩৮

আপডেট: ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৫৮

শেয়ার

চবির আবাসিক হলে মাদকের আসর
ছবি: বাংলা এডিশন

চট্টগ্রাম বিশ্ববদ্যালয়ের (চবি) শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের তিনটি কক্ষে অভিযান চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। অভিযানে দুইটি কক্ষ থেকে মদ,গাঁজাসহ অসংখ্যা মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। একটি কক্ষে সরাসরি মাদকদ্রব্য না পেলেও মাদক সেবনের আলামত পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি এই অভিযান চালায়।

জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে শহীদ ফরহাদ হোসেন হল সংসদের জন্য নির্ধারিত কক্ষটি কতিপয় ৪জন ছাত্র বিনা অনুমতিতে তালা ভেঙে দখল করে ছিল। তারা হলেন ইতিহাস বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান, লোকপ্রশাসন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সামিউল আলম সজল, স্পোর্টস সাইন্স ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের মুশফিক অভি এবং আইইআর ২০২২-২৩শিক্ষাবর্ষের শুখন। এটি ছিল C ব্লকের ১০৮ নাম্বার কক্ষ।

হল প্রভোস্টেরর সূত্র থেকে জানতে পারি, অভিযুক্তদের হল প্রশাসন থেকে একাধিকবার মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিলেও তোয়াক্কা করেনি। হল প্রশাসন পরবর্তীতে তালা লাগালে পুনরায় তালা ভেঙে দখলদারিত্ব প্রদর্শন করে। চাকসু নির্বাচন পরবর্তীতে হল প্রভোস্ট স্বাক্ষরিত নোটিশ প্রদানের পরে তা কক্ষের সামনে থেকে ছিঁড়ে ফেলে ও নোটিশকে অগ্রাহ্য করে গতকারও ওই কক্ষে অবস্থান করে থাকে। প্রতিনিধিরা শপথ গ্রহণের পর প্রভোস্টের কাছে হল সংসদের বৈঠক সংক্রান্ত আলোচনা করলে প্রভোস্ট কক্ষটির ব্যাপারে প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তা চায়। প্রক্টর স্যারসহ ৩ জন সহকারী প্রক্টর সেই কক্ষে প্রবেশ করলে এই চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি ধরা পড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে কোনো ছাত্রের পড়াশোনার পরিবেশ নাই, কক্ষটিকে মূলত মাদকরাজ্য বানিয়ে রাখা হয়েছিল। নানা ধরনের মাদকদ্রব্যে ভরপুর ছিল রুমটি।

এসময় হলের বিভিন্ন রুম থেকে ছাত্ররা দেখতে আসে হল সংসদ অফিস উদ্ধার অভিযান। মাদক দ্রব্য উদ্ধার দেখে ছাত্ররা হলের আরও দুটি রুমে মাদকের অভিযোগ করতে প্রক্টরিয়াল বডিকে

অনুরোধ জানায়। তখন প্রক্টরিয়াল বডি এই দুটি রুমেও অভিযান চালায়। কক্ষ দুটি হলো C ব্লকের ১০৪ এবং A ব্লকের ১০২ নাম্বার রুম।

১০২ নাম্বার রুমে এসে আরও চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যেখানে বসতো নিয়মিত মাদকের আসর। এই রুমে থাকতো একই বিভাগের তিন শিক্ষার্থী। এই শিক্ষার্থীরা জার্নালিজম বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষকবর্ষের। তারা হলেন শাখাওয়াত হোসেন শুভ, আব্দুস সালাম (সালমান) এবং সিফাতুল ইসলাম।তবে এদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আপত্তি ছিল। খতিয়ে দেখা হলে আরও নতুন তথ্যের দানা বাধে৷ এই তিনজনই যুক্ত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়র ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে। যার মধ্যে সিফাত চাকসু নির্বাচনের সময় ছাত্রদল প্যানেলে দায়িত্বও পালন করেছিল।

C ব্লকের 104 নম্বর কক্ষেও তল্লাশি করা হয়। এখানে সরাসরি মাদক না পেলেও নেশা করার আলামত পাওয়া গেছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ফরহাদ হলের নবনির্বাচিত ভিপি শরিফুল ইসলাম বলেন, “এখন প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই অপরাধ মহামারী আকার ধারণ করবে। আমরা একটি সুন্দর, পরিবেশবান্ধব হল চায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, “অভিযোগ পেয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে সেখানে যায়। আমরা সেখানে বিভিন্ন ধরনের মাদক দেখেছি। এছাড়া, আরো দুটি কক্ষেও মাদক পাওয়া গেছে।”

তিনি বলেন, “জড়িতের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



banner close
banner close