সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩ পৌষ, ১৪৩২

গবি ক্যান্টিনে ইঁদুর কাণ্ডে তোলপাড়

গবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর, ২০২৫ ২৩:২৩

শেয়ার

গবি ক্যান্টিনে ইঁদুর কাণ্ডে তোলপাড়
ছবি: বাংলা এডিশন

শিক্ষার্থীরা দিচ্ছে টাকা, আর পাচ্ছে বিষ? গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) কেন্দ্রীয় ক্যান্টিনে নোংরামি, অব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যঝুঁকি আর চড়া দামের অভিযোগে তোলপাড় চলছিল অনেক দিন ধরেই। যে চিত্র বুধবার (২২ অক্টোবর) ছাত্র সংসদের অভিযানে ধরা পড়েছেতা যেন দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যান্টিন অব্যবস্থাপনার নগ্ন এক প্রতিচ্ছবি। প্রশ্ন উঠছেএই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন নামক কর্তৃত্ব কোথায় ছিল এতদিন?

দুই দফায় পরিচালিত অভিযানে বেরিয়ে আসে চমকে দেওয়া সব চিত্রপচা খাবার, দুর্গন্ধযুক্ত ফ্রিজ, আর খাবারের সঙ্গে একই ছাদের নিচে বাস করা ইঁদুরের উপস্থিতি।

অভিযান-পরবর্তী পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, রেফ্রিজারেটরে কাঁচা মাংস, বাসি ভাত ও রান্না করা তরকারি একসঙ্গে স্তূপ করে রাখা। ফ্রিজ খুলতেই নাক-মুখ চেপে ধরতে হয় উপস্থিতদের। রান্নাঘরের চারপাশ নোংরা, দেয়ালে স্যাঁতস্যাঁতে দাগ, ফাটা পলিথিনে মোড়া বাসি খাবার, আর চালের ভাত রাখা বাঁশের ঝুড়িতে ইঁদুরের বিচরণ ও মাকড়সার জালের দৃশ্য শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দেয়।

শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, প্রশাসনিক মহলে বারবার অভিযোগ জানানো হলেও পরিবর্তন ছিল সামান্যই। “আমরা টাকা দিয়ে বিষ কিনছি নাকি খাবার?”—এ প্রশ্ন ছুড়ে ক্ষোভ জানান এক শিক্ষার্থী।

ক্যান্টিনের সার্বিক বিষয় নিয়ে ক্যান্টিন মালিক আরশাদের সাথে কথা বলতে গেলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, 'আমি কোন কথা বলবো না। আমি ক্যান্টিন ছেড়ে দিব, ভার্সিটিতে চিঠি দিয়েছি আপনারা তাদের সাথে কথা বলেন।'

বাসি-পঁচা ভাত-তরকারি সংরক্ষণের বিষয়ে বলেন, 'বাসি খাবার তো খাওয়াই যায়। আমরাও খাই।'

গকসু'র সমাজকল্যাণ ও ক্যান্টিন বিষয়ক সম্পাদক মনোয়ার হোসেন অন্তর বলেন, "ছাত্রসংসদের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ ক্যান্টিনে আসা হয়, এখানে একই ফ্রিজে রান্না করা খাবার ও কাঁচা খাবার রাখা হয়েছে। আমরা বলেছি ফেলে দিতে কিছুক্ষণ পর আবার মনিটরিং করা হবে, যদি তারা ঠিক না করে আজ থেকেই ক্যান্টিন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, "নির্বাচনের পর আমরা কয়েক বার এসেছে, বলা হয়েছে তাদের কি সমস্যা, পরিষ্কার এর বিষয় নিয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে কিন্তু কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।"

অন্যদিকে ক্যান্টিন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম জানান,

মালিক পূর্বে ক্যান্টিন ছাড়ার জন্য চিঠি দিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন, কমিটি ও ছাত্র সংসদ রোববার বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

নিয়মিত তদারকি না থাকা এবং ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই শিক্ষার্থীরা এ সংকটের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন। তবে অভিযানের পর শিক্ষার্থীদের একটাই প্রত্যাশা—“অন্তত ক্যান্টিনে নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবারটি যেন নিশ্চিতে হয়।



banner close
banner close