জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন অভিযোগ করেছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ত্রিভুজ প্রেমের গল্প সাজিয়ে নিহত শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইনের চরিত্র হরণের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, 'জুবায়েদ এমন ছেলে নয়। তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। আমরা চাই প্রকৃত খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক, কোনো নিরপরাধ যেন শাস্তি না পায়।'
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, 'জুবায়েদ নির্মমভাবে খুনের শিকার হয়েছে। আমরা ২১ তারিখ সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রশাসনকে সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর অমীমাংসিত থেকে গেছে।'
তিনি প্রশ্ন তোলেন, 'মামলায় যে এজাহার দায়ের করা হয়েছে, সেখানে ইন্ধনদাতা বর্ষার একটি বক্তব্য রয়েছে—সে জুবায়েদের লোকেশন ট্র্যাক করে রুমমেটকে জানিয়েছিল। এটি তো মূল সূত্র হওয়ার কথা, কিন্তু কেন সেটি এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি?'
তিনি আরও বলেন, 'সিসিটিভি ফুটেজে কালো ও লাল টি-শার্ট পরিহিত দুজনকে দেখা গেছে। তারা কি সেই দুই আসামি? হলে তাদের পোশাক জব্দ করা হয়েছে কি না—এটাও প্রশ্ন। মাত্র একবার ছুরিকাঘাতে জুবায়েদ নিহত হয়েছে। মাহিরের মতো খাটো উচ্চতার কেউ কীভাবে জুবায়েদের মতো লম্বা ছেলেকে হত্যা করতে পারে? নাকি প্রফেশনাল কিলার ভাড়া করা হয়েছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা জানতে চাই।'
অধ্যাপক রইছ উদ্দীন আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করতে চাই, পুলিশ বাদীপক্ষের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করছে না। তবে যদি এমন কিছু ঘটে, আমরা তা প্রকাশ করব।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা শোকে বিহ্বল। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের জন্য যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল, সেই মঞ্চেই জুবায়েদের শোকসভা হয়েছে। আগামী ২৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস জুবায়েদের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হবে।'
তিনি জানান, 'পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে তিনজন আসামিকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মাত্র তিন দিনের মাথায় মামলায় এমন অগ্রগতি প্রশংসনীয়। তবে আমরা চাই, যাতে আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ পার না পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হবে, যিনি মামলাটির তদারকি করবেন।'
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:








