সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩ পৌষ, ১৪৩২

হল সংসদের ছাত্র প্রতিনিধিকে ধমক দেয়ার অভিযোগ প্রভোস্টের বিরুদ্ধে

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:১১

শেয়ার

হল সংসদের ছাত্র প্রতিনিধিকে ধমক দেয়ার অভিযোগ প্রভোস্টের বিরুদ্ধে
সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আলাওল হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে হল সংসদের নবনির্বাচিত রিডিংরুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদককে ধমক দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসময় প্রভোস্ট ওই সম্পাদককে ধমক দিয়ে বলেন যে, বিভিন্ন জায়গা থেকে ফান্ড এনে নিজের টাকায় তোমাদের ইশতেহার পূরণ করো।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে হলের রিডিং রুমে হল প্রভোস্ট এবং ওই সম্পাদকের মাঝে কথোপকথন হয়।

আজ রাত সাড়ে ৮টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন হল সম্পাদক শিহাবুর রহমান শিহাব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। সদ্য অনুষ্ঠিত আলাওল হল সংসদ নির্বাচনে তিনি রিডিংরুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে আলাওল হল সংসদে রিডিং রুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, “আলাওলের ডাইনিং এ আমি গতমাসে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বে ছিলাম। ডাইনিং এ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি কম থাকায় সেগুলোর একটা তালিকা করে গেল মাসে প্রভোস্ট স্যারকে একটা আবেদন করেছি। নতুন সরঞ্জামের বিষয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আজকে সকালে ডাইনিং এ গিয়ে কর্মরত মামাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের একটা তালিকা করে স্যারের কাছে যাই। স্যার তখন হলের রিডিং রুমে ছিলেন। তখন আমি স্যারকে রিডিং রুমের চেয়ার টেবিল নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কিছুটা রাগান্বিত হয়ে বলে, তুমি কে? তুমি এমন প্রশ্ন করছো কেন? অফিসে জিজ্ঞেস করো গিয়ে! পরে আমি পরিচয় দিই। এরপর স্যার বলে যে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফান্ড এনে নিজের টাকায় তোমাদের ইশতেহার পূরণ করো।”

প্রভোস্টের এমন মন্তব্যের জেরে আলাওল হলে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নাহিন মোস্তফা। জানতে চাইলে তিনি বলেন, “চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদের প্রতিনিধিরা যখন ইশতেহার অনুযায়ী সাধারণ শিক্ষার্থীদের মেন্ডেডে কাজ করতে যায় একজন প্রভোস্ট ও একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে অসহযোগিতামূলক আচরণ কোনোভাবেই কাম্য না। দলমত নির্বিশেষে সকল দায়িত্বশীলদের নিরপেক্ষ ভূমিকা দেখতে চাই শিক্ষার্থীরা। আমরা চাই ছাত্র প্রতিনিধিরা যেন দ্বিধাহীন ভাবে কাজ করতে পারেন এবং আবাসিক হলে যেন আমরা সুন্দর পরিবেশ আনতে পারি।”

এবিষয়ে আলাওল হলের ভিপি রাকিব মাহমুদ বলেন, “ঘটনাটি আমি বিস্তারিত জানি না। জরুরি প্রয়োজনে ক্যাম্পাসের বাহিরে এসেছি আমি। পুরো ঘটনা জেনে সমাধানের চেষ্টা করবো।”

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “একজন প্রভোস্ট দায়িত্বশীল জায়গা থেকে হলের শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন মন্তব্য করতে পারেন না। আগে তো তিনি এমন মন্তব্য করেন নি। চাকসু নির্বাচনের পরে তিনি এ ধরণের মন্তব্য করছেন। এ থেকে বুঝা যায় যে ভিন্ন মতকে সহ্য করার সক্ষমতা ও মানসিকতা একজন প্রভোস্ট হিসেবে উনার মাঝে নেই।”

জানতে চাইলে আলাওল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এনামুল হক বলেন, “আজকে সকালে আমি রিডিং রুম দেখতে গেলে একজন শিক্ষার্থী এসে বলে রিডিং রুমে চেয়ার টেবিল নেই কেন। আমি বলেছি তুমি কি জানো না এটা? আসলে রিডিং রুমের চেয়ার টেবিলের জন্য কোনো বাজেট ছিল না। পরে আমি নিজ উদ্যোগে ৫০ টি চেয়ার ও ৫টি টেবিল মোট ৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় কিনার ব্যবস্থা করেছি। তবে সেগুলো মানসম্মত না হওয়াতে সেগুলো ফেরত দেওয়া হয়।”

তিনি আরও বলেন, “একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে এগুলো তো তোমার জানার কথা, আমি এ কথা বলেছি শিহাবকে। ইশতেহার সংক্রান্ত কোনো কথা আমি তাকে বলিনি। শিক্ষার্থীরা টাকা কোথা থেকে পাবে। তারা তো আমার সন্তান। আমি বিগত এক বছরে ৪০ লাখ টাকার সংস্কার কাজ করেছি পুরো হল জুড়ে। এটা তো কেবল সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য।”



banner close
banner close