সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪ পৌষ, ১৪৩২

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় ইসকনের কার্যক্রম

সুজন মাহমুদ

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:১০

শেয়ার

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় ইসকনের কার্যক্রম
শিক্ষার নামে চলছে উগ্রতা

পবিত্র কোররআন শরীফ অবমাননার অভিযোগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপূর্ব পাল নামের এক শিক্ষার্থীকে গণপিটুনি দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।

শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঘটনা ঘটে। পরে ওই শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েছে পুলিশ।

এর আগে, ওইদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ওই শিক্ষার্থী পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে নিরাপত্তা দিয়ে বের করে দেয়।

অভিযোগ রয়েছে, মানসিক রোগী দাবি করা ওই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপদে সরিয়ে দিয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা কর্মীদের ওপর দায় চাপিয়েছে। তবে, নিরাপত্তা কর্মীরা বাংলা এডিশন টিমকে বলছে, ওই শিক্ষার্থীর ভাগ্য ভালো তিনি নিরাপদে বের হতে পেরেছে। তারা এমন কুলাঙ্গারকে নিরাপত্তা দেয়নি। বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই তাকে বের করে দিয়েছে। মূলত তাদের ওপর দায় চাপানোর গুজব ছড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরইমধ্যে ঘটনায় ধারণকৃত কিছু ভিডিওফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই শিক্ষার্থী নিজেও তার ফেসবুক আইডি থেকে কোরআন অবমাননার ভিডিও আপলোড করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপরই দাবি উঠে তাকে গ্রেপ্তারের।

ঘটনার জেরে শনিবার রাত ১টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাসার সামনে শিক্ষার্থী স্থানীয়রা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করলে ছাত্র-জনতা তাকে মারধর শুরু করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছে, তাকে শুধু বিচারের আওয়াতায় আনলেই হবে না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে করতে হবে আজীবনের জন্য বহিস্কার।

শিক্ষার্থীরা আরও বলছে, দেশের এসব ঘটনা নতুন কিছু নয়। মাঝে মধ্যেই ঘটে এমন ঘটনা। প্রতিবাদে কিছুদিন মিছিল হয় বিক্ষোভ হয় এরপর পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কয়েকদিন গেলেই সেটি ধামাচাপা পড়ে যায়।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আরও বলছে, যেকোনো ধর্ম অবমাননাকারীকে শাস্তি আওয়াতায় আনার বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধানে আসুক, আইনে থাকুক। শুধু ইসলাম নয়, যে কোনো ধর্মকে অবমাননা করলে তাকে সর্ববোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।

এমনকী প্রতিবাদের ভাষা হিসাবে ধর্মীয় স্লোগান দেয়ার অধিকারও চায় নর্থ সাউথের শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের এমন সাক্ষাৎকার নিতে গেলে বাধার মুখে পড়ে বাংলা এডিশন টিম।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকেসাধারণ মুসলিম শিক্ষার্থী জনতারব্যানারে পবিত্র কুরআন অবমাননা করায় অপূর্ব পালের শাস্তির দাবিতে গণ অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ।

নর্থ সাউথে ইউগা এবং জিম ট্রাইনার থাকলেও নেই কোনো ঈমাম। আগে একজন ঈমাম থাকলেও তাকে বের করে দেয়া হয়েছে। এমনকি এখানে হিজাব বিদ্ধেষী অনেক ফ্যাকাল্টিও রয়েছে। হিজাবী নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হয়েছে বলে দাবি ইন্তিফাদা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আহমেদ রফিকের।

তিনি আরো দাবি করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কুরআন অবমাননাকারী ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দিয়ে বাসায় পৌছে দিয়েছে এবং তারা এই দায় নিরাপত্তা কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেরাও ইসলাম বিদ্ধেষী।

অভিযোগ রয়েছে, নর্থ সাউথে শিক্ষার নামে শেখানো হয় উগ্রতা বেহায়াপনা। বাংলা এডিশনের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আট নম্বর গেইটের সামনে খোলামেলা ভাবে ছেলেদের সাথে ধূমপান করছে নারী শিক্ষার্থীরাও। অভিযোগ আছে বিক্রি হয় গাঁজাও।

এবিষয়ে রফিক আরো বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ধুমপান করা যাবে, মাদক সেবন করা যাবে, অশ্লীল পোশাক পরা যাবে শুধু দাড়ি রাখলে তাকে কোনঠাসা করে রাখা হবে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ইসকনকে পেপার সাপ্লাই দেয় বলেও অভিযোগ এই আলেমের। তিনি দাবি করেন, এক অবৈধ ভারতীয় নাগরিককে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পরে তাকে বৈধ করা হয়েছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় হিন্দুত্ববাদী আগ্রসনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

নর্থ সাউথে ঘটনায় ধর্ম উপদেষ্টার বার্তা না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আলেম সমাজ। তিনি নির্দিষ্ট দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে বলে অভিযোগ এই মুফতির।

ইন্তিফাদা বাংলাদেশের গণঅবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থী পরিচয়ে একজন এসে কর্মসূচি বাঞ্চালের চেষ্টা করলে সেখানে থাকা বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে মারপিটের চেষ্টা করে। তবে, সেখানে থাকা আলেমদের হস্তক্ষেপে রক্ষা পায় ওই যুবক। পরে ইন্তিফাদা বাংলাদেশের সাথে একত্বতা প্রকাশ করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেয় স্থানীয় আলেমরাও। দাবি উঠে ওই কুলাঙ্গারের ফাঁসির।



banner close
banner close