চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনে (চাকসু) আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীসংস্থার বিরুদ্ধে। গত ২ অক্টোবর আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে একটি পত্র জমা দিয়েছে চবি ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান এতে স্বাক্ষর করেন। তবে অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে ছাত্রী সংস্থার চবি শাখার নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের এই অভিযোগপত্রে বলা হয়, “গত ৩০ সেপ্টম্বর তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে ছাত্রীসংস্থার নেত্রীরা ফার্স্ট এইড বক্স বিতরণ করেছেন, যাতে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। আমরা আরও অবগত হয়েছি ঐ হলের প্রভোস্ট তাদের সহযোগিতা করেছেন। ঐ হলের প্রভোস্ট নির্বাচন কমিশনের সদস্য হয়েও আচারবিধি লঙ্ঘনে সহযোগিতা করায় উনি নির্বাচনী শপথ ভঙ্গ করেছেন। হল ছাত্রীসংস্থা ও প্রভোস্টের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।”
চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “শামসুন নাহার হলে নির্বাচনী আচারবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশনে। এক্ষেত্রে হলের প্রভোস্ট এতে জড়িত আছেন। তিনি চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য। এক্ষেত্রে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। এছাড়া এই হলের প্রভোস্টের এমন আচরণ পক্ষপাতমূলক বলে আমি মনে করছি।”
তবে এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রীসংস্থার সেক্রেটারি নাহিমা আক্তার দ্বীপা। তিনি বলেন, “আমরা ফার্স্ট এইড বক্সটি হলে দিয়েছিলাম গত ২২ আগস্ট তারিখে৷ চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আমরা এটা দিয়েছি। তবে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হলে আমরা এটা সরিয়ে নিই৷ পরবর্তীতে হলে এক ছাত্রীর দরকার হলে এটি ব্যবহার করেন। কিন্তু এটাকে শামসুন্নাহার হলের ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন। আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকেও যথাযথ উত্তর দিয়েছি।”
এবিষয়ে শামসুন নাহার হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. বেগম ইসমত আরা হক বলেন, “ফার্স্ট এইড বক্সটি হলে ২২ আগস্ট থেকে ছিল। তবে তখন ছাত্রীসংস্থার মেয়েদের রুমে ছিল এবং ওখান থেকেই মেয়েরা প্রয়োজনে ব্যবহার করতো। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার একটি মেয়ের জরুরি দরকার হলে ছাত্রীসংস্থার মেয়েরা এটি সিকিউরিটি গার্ডের টেবিলে দিয়ে যায়। কিন্তু পরদিনই তারা আবার দুঃখ প্রকাশ করে এটি সরিয়ে নেয়।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রীসংস্থার মেয়েরা শোকজের যথার্থ উত্তর দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেন। তারা আমার কাছেও বিষয়টি নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন।”
এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, “ফার্স্ট এইড বক্সটি হল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ছাত্রীসংস্থা ও প্রভোস্টকে শোকজ করা হয়েছে। ওনাদের মতামতের পর যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত চাকসু নির্বাচন। নির্বাচন কেন্দ্রীয় এবং হল সংসদে সর্বমোট প্রার্থী হয়েছেন ৯০৮ জন। কেন্দ্রীয় সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৪১৫ জন এবং হল সংসদে অংশ নিচ্ছেন ৪৯৩ জন। নির্বাচনে ভোটদানে অংশ নিবেন ২৭ হাজার ৬৩৪ জন।
আরও পড়ুন:








