গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (গবিসাস) কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভিপি পদপ্রার্থী খোদার নূর ইসলাম। এ বিষয় জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করতে আসেন আরেক ভিপি পদপ্রার্থী নাসিম।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবিসাস কার্যালয় থেকে ভিপি পদপ্রার্থী খোদার নূরকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে যান নাসিম। এর আগে প্রায় আড়াই ঘন্টাব্যাপী গবিসাস কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন তিনি।
খোদার নূর ইসলাম আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রদলের ঢাকা জেলা (উত্তর) আহ্বায়ক ছিলেন।
খোদার নূর অভিযোগ করেন, কয়েক দিন থেকে ফেসবুক গ্রুপে এনোনিমাস আইডি থেকে তাকে নিয়ে বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট করা হচ্ছে। এডমিন প্যানেলের সহায়তায় পোস্ট দাতার পরিচয় বের করেন তিনি। শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় গেটে পোস্টদাতা মোরাশেদুল ইসলাম তানজিৎদের সাথে দেখা হলে তিনি ওই পোস্ট সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তানজিৎ এর পক্ষের কয়েকজন খোদার নূরের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ালে তিনি তৎক্ষনাৎ গবিসাস কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এবং নির্বাচন কমিশনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন।
এ সম্পর্কে গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির এক সদস্য জানান, “খোদার নূর আতঙ্কিত হয়ে আমাদের কার্যালয়ে আসেন। আমরা তখন পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করি।”
যার পোস্ট ঘিরে এ ঘটনার সুত্রপাত সেই মোরশেদুল ইসলাম তানজিৎ গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৩৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। মোরশেদুল ইসলাম তানজিৎ অভিযোগ করেন, আসন্ন নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী রাকিবের পক্ষে কাজ করায় তাকে হুমকি দিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শেখ খোদার নূর ইসলাম রনি। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন খেজুরটেক এলাকায় রনির সঙ্গে দেখা হলে তিনি রাকিবের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার মূলক কথা বলেন এবং তানজিৎকে হুমকি দিয়ে বলেন, রাকিবের পক্ষে কাজ করলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না এবং স্থানীয় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন।
তানজিৎ আরও জানান, এই ঘটনার প্রতিবাদে তিনি নাম প্রকাশ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপে রনির বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে একটি পোস্ট করেন। আজ (২০ সেপ্টেম্বর) রনি ও তার সমর্থকরা এই পোস্টের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তানজিৎ বিষয়টি অস্বীকার করলে রনি পোস্টের প্রমাণ দেখিয়ে থানায় সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ করার চেষ্টা করেন এবং তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার হুমকি দেন। এসময় তিনি স্থান ত্যাগ করতে চাইলে রনি তাকে হ্যাচকা টান দেয় এবং ক্ষিপ্রতা দেখায়। তানজিৎ বলেন, 'একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার নিরাপত্তা ও সম্মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। আমি আমার প্রাপ্য নিরাপত্তা ও সম্মান ফিরে পেতে চাই।
খোদার নূর বলেন, "আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগের জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করেছি কিন্তু তাদেরকে ফোন কলে পাওয়া যায়নি। আগামীকাল আমি কমিশন বরাবর অভিযোগ জানাবো আশাকরি তারা দৃষ্টান্ত মূলক ব্যবস্থা নিবেন।"
পরে উদ্ধারে আসা নাসিমের প্রসঙ্গে বলেন, "উদ্ধারের নামে রাজনীতি করতে আসার প্রয়োজন নাই। তোমাদের থেকে আমার রাজনীতির বয়স বেশি। এসব নাটক চাই না।"
এপ্রসঙ্গে ভিপি পদপ্রার্থী নাসিম বলেন, "রনি (খোদার নূর) ভাইয়ের ফেইসবুক পোস্ট দেখার পরেই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে উনার সহযোগিতায় এসেছিলাম কিন্তু উনি বিভিন্ন কথার মাধ্যমে আমাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন যেন আমাদের আসাই ভুল হয়েছে।"
এ বিষয়ে গকসু নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ফুয়াদ হোসেন বলেন, "এখনো পর্যন্ত এসংক্রান্ত কোনো বিষয়েই লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলেই বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
আরও পড়ুন:








