শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) জুলাই মাসের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে এবং বিচারের দাবিতে ৬ শিক্ষক ও ৩ কর্মকর্তার কক্ষে তালা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতারা। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় এই ঘটনা ঘটে।
রাজনৈতিক নেতারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে বরং বিশৃঙ্খলার সুযোগ সৃষ্টি করছে। প্রাথমিকভাবে আরও অধিক সংখ্যক কক্ষে তালা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও উপস্থিত নেতাদের মধ্যে মতবিরোধের কারণে সর্বসম্মতভাবে ৯টি কক্ষে তালা দেওয়া হয়।
তালা দেওয়া শিক্ষকদের মধ্যে আছেন মাইক্রোবায়োলজি ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের ড. উদয় কুমার মাহন্ত, এন্টোমলজি বিভাগের ড. আয়েশা আক্তার, এগ্রো ফরেস্ট্রি ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের ড. মো. ফরহাদ হোসেন ও ড. নাসরিন সুলতানা, বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের ড. মো. কামাল উদ্দিন আহমদ এবং সয়েল সায়েন্স বিভাগের ড. অলোক কুমার পাল। কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন ফিজিক্যাল এডুকেশনের মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের আলিউল আলম টুয়েল এবং বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের সোনিয়া নুসরিন সুমি।
গত বছর ২৮ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির সুপারিশে ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১২ জন শিক্ষক, ৭ জন কর্মকর্তা ও ১১ জন কর্মচারীকে সাময়িক বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তি প্রদান করা হয়। বাকিদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি, ক্লাস-পরীক্ষা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা এবং বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাও আরোপিত হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য তৌহিদ আহমেদ আশিক অভিযোগ করেন, প্রশাসন কিছু দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে হলেও প্রত্যাশিত মাত্রায় বিচারের সুযোগ দেয়নি, ফলে তারা এখনও অস্থিতিশীলতার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
শেখৃবির শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বিএম আলমগীর কবির বলেন, জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের সময় কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা লাঠি মিছিল করে শিক্ষার্থীদের প্রতিহত করেছিলেন, যা সুষ্ঠু বিচার হয়নি। বিচার না করে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলার সুযোগ সৃষ্টি করছে। এজন্য তারা তালা দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, তবে ছাত্রনেতাদের এতে কোনো অংশ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আরফান আলী বলেন, প্রশাসন ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সিন্ডিকেট অনুমোদিত আরেকটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্ত চলাকালে এ ধরনের কার্যক্রম সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য সহায়ক নয়। তিনি সবাইকে আইন নিজের হাতে না নিয়ে প্রশাসনের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন:








