পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) দীর্ঘদিন ধরে চলমান নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত শাখার ২৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। এর আগে গত ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় ২১ নম্বর আলোচ্যসূচির অধীনে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২৪ মে পর্যন্ত অভিযোগ সংগ্রহ শেষে তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ জুলাই জমা দেওয়া হয়।
প্রাপ্ত ৯টি অভিযোগের মধ্যে ৬টি প্রমাণিত হয়, ২টি অভিযোগে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং ১টি অভিযোগে অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী আপস করেন।
তদন্তে প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তিপ্রাপ্তদের তালিকা অনুযায়ী—
আজীবনের জন্য শিক্ষাগত সনদ বাতিল (১১ জন):
লিংকন হোসেন (বাংলা, ২০১৩-১৪)
মো. নুরুল্লাহ — ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (ব্যবসায় প্রশাসন, ২০১৪-১৫)
মাসুদ রানা সরকার (গণিত, ২০১৫-১৬)
হামিদুর রহমান শামীম (পদার্থবিজ্ঞান, ২০১৫-১৬)
ইকরামুল ইসলাম (বাংলা, ২০১৫-১৬)
মিনহাজুল ইসলাম প্রান্ত (সমাজকর্ম, ২০১৫-১৬)
রাসেল হোসেন রিয়াদ (বাংলা, ২০১৫-১৬)
বিল্লাল হোসেন (অর্থনীতি, ২০১৬-১৭)
সুরুজ মিয়া আপেল (গণিত, ২০১৭-১৮)
শেহজাদ হাসান (ব্যবসায় প্রশাসন, ২০১৭-১৮)
শিবু দাস (লোক প্রশাসন, ২০১৮-১৯)
৩ বছরের জন্য সনদ স্থগিত (৭ জন):
শাহেদ জামিন হিরা (পদার্থবিজ্ঞান, ২০১৫-১৬)
নাজমুল ইসলাম আবীর (গণিত, ২০১৩-১৪)
সাব্বির হোসেন সবুজ (বাংলা, ২০১৫-১৬)
শেখ রাসেল (লোক প্রশাসন, ২০১৫-১৬)
সোহানুর রহমান সোহান (ইংরেজি, ২০১৬-১৭)
জহরুল ইসলাম পিয়াস (অর্থনীতি, ২০১৭-১৮)
জাহির রায়হান (বাংলা, ২০১৮-১৯)
আজীবন বহিষ্কার (৬ জন):
ফরিদুল ইসলাম বাবু — ছাত্রলীগের সভাপতি (EEE, ২০১১-১২)
নাইমুর নাহিদ ইমন (ব্যবসায় প্রশাসন, ২০১৬-১৭)
আশিক আরমান শোভন (স্থাপত্য, ২০১৬-১৭)
তৌফিক হাসান হৃদয় (ব্যবসায় প্রশাসন, ২০১৭-১৮)
অয়ন আলমাস (বাংলা, ২০১৮-১৯)
তানশু দাস (ইতিহাস, ২০১৮-১৯)
৩ বছরের জন্য বহিষ্কার (৪ জন):
আশরাফুল ইসলাম (গণিত, ২০১৯-২০)
আকাশ ভূঁইয়া (পদার্থবিজ্ঞান, ২০১৯-২০)
অনিক পোদ্দার (ইতিহাস, ২০১৮-১৯)
শাহ আলম (ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ২০১৮-১৯)
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, “তদন্ত কমিটি অত্যন্ত পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, একাধিকবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারও প্রতি অবিচার করা হয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে সুশাসন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণের অংশ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:








