পাঁচ আগস্ট ২০২৪ এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের লালমাটিয়া, মিরপুর ও উত্তরা ক্যাম্পাসে 'জুলাই বিপ্লব ২০২৪' স্মরণে আয়োজিত চার দিনব্যাপী কর্মসূচি ছিল সৃজনশীল, শিক্ষামূলক ও অনুপ্রেরণামূলক। ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া 'রেড জুলাই' নামে পরিচিত এই আয়োজনে স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতা, গণজাগরণ ও শহীদদের আত্মত্যাগের চেতনা সম্পর্কে সচেতন হয়ে দেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা পুনঃনির্ধারণ করেন।
প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ছিল কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, রচনা ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতা, ক্লিপ-আর্ট ডিসপ্লে, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, মুক্ত আলোচনা ও দোয়া মাহফিল। বিশেষভাবে, এলিমেন্টারি শাখার শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকার হাতের ছাপ, ওয়ার্কশিট রঙ এবং দেয়াল পত্রিকা তৈরির মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অন্যদিকে, প্রাইমারি থেকে হায়ার সেকেন্ডারি পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে চিত্রাঙ্কন, রচনা, বক্তৃতা, কুইজ এবং কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায়।
এমন আয়োজনের মধ্যে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শহীদ মুগ্ধাকে নিয়ে মুহাম্মদ শাহাদত হোসাইনের লেখা কবিতার আবৃত্তি, তাসিন আহমেদের ভাষণ এবং মাহদি সিনদিদ চৌধুরীর আবৃত্তি উপস্থিত সবাইকে বিমোহিত করেছে। এতে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই বিপ্লবে আহত এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষক আসাদুল্লাহিল গালিব। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ও আত্মত্যাগের গল্প শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়া, স্কুলের তিনটি ক্যাম্পাসের প্রায় চারহাজার শিক্ষার্থী এবং ছয়’শ শিক্ষক ও কর্মচারী উজ্জীবিত পরিবেশে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে। এটি ছিল একটি উৎসবমুখর ও শিক্ষণীয় পরিবেশ, যা পুরো স্কুল কমিউনিটির জন্য ছিল এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
অনুষ্ঠান শেষে, এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হেড অব স্কুল মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব আমাদের জাতীয় আত্মপরিচয়ের গৌরবময় অধ্যায়। নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো, অনুভব করানো এবং দেশের কল্যাণে অবদান রাখতে অনুপ্রাণিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’ তিনি আরও জানান, এমন উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মাঝে দেশপ্রেম, নৈতিকতা, নেতৃত্ব ও মানবিক চেতনার বীজ বপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করছে।
এই আয়োজনের মাধ্যমে, এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করেছে, তেমনি তাদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে, যা তাদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের পথে একটি শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন:








