সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪ পৌষ, ১৪৩২

নোবিপ্রবিতে গণঅভ্যুত্থান দিবস আয়োজনে বিতর্ক, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি-

প্রকাশিত: ৫ আগস্ট, ২০২৫ ১৪:৩১

শেয়ার

নোবিপ্রবিতে গণঅভ্যুত্থান দিবস আয়োজনে বিতর্ক, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
ছবি সংগৃহীত

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষের আয়োজিত গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ভিসি বাংলোতে নৈশভোজ আয়োজনকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখ রাতে ভাইস চ্যান্সেলর বাংলোতে একটি নৈশভোজের আয়োজন করছে, যেখানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্রে এ নৈশভোজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী ও নেতৃত্বদানকারী সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের সন্মানে এ নৈশভোজের আয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন। সকল শিক্ষার্থীদের জন্য ফিস্টের আয়োজন না করায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈশভোজে আমন্ত্রণ পাওয়া একটি অংশ এই আয়োজনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এমআইএস বিভাগের শিক্ষার্থী বনি ইয়ামিন

এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, “৫ আগস্ট প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন মিটিং-এ আমি প্রথম প্রশাসনকে বলি হলের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিস্টের ব্যবস্থা করতে। কিন্তু বাজেট সংকটের কথা বলে প্রশাসন সেই প্রস্তাব আমলে নেয়নি। অথচ তথাকথিত কিছু সমন্বয়কারীর পরামর্শে লাখ টাকার কনসার্ট আয়োজন করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “শহীদ পরিবার ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবহেলিত রেখে প্রশাসনের এই দ্বিমুখী আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। সকল শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার নিশ্চিত না হলে আমরা নৈশভোজের দাওয়াত গ্রহণ করব না।”

অন্যদিকে, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান আরিফ গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক আয়োজনকে ‘জুলাই শহীদদের আত্মার প্রতি অবমাননাকর’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “যারা আমাদের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগের স্মৃতির মাসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা শহীদদের আত্মার সাথে বেঈমানির শামিল। এটি বিগত সময়ের কালচারাল ফ্যাসিজমেরই প্রতিচ্ছবি।”

এই পরিস্থিতিতে মাহমুদুল হাসান আরিফ ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটি’ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি আমার জায়গা থেকে এই প্রোগ্রাম প্রতিহত করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং সেই সাথে এই কমিটি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।”

এ বিষয়ে ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির আরেক সদস্য জাহিদুল ইসলাম হাসান বলেন, আমরা প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম সৈরাচারের বিদায় উপলক্ষে বিজয় কনসার্টের। কোন শহীদদের স্মরণে এটা আয়োজনের প্রস্তাব করা হয় নি।

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে সামাজিক মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের পছন্দ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করায় তীব্র সমালোচনা করেছে।

ভিসি বাংলোতে নৈশভোজে আমন্ত্রণ পাওয়া এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ফিস্টের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আমন্ত্রণে যাবোনা।

নৈশভোজের বিষয়ে নোবিপ্রবি উপ উপাচার্য ও দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেজুয়ানুল হক বলেন, "আসলে বাজেট সংকটের কারনে সবাইকে নিয়ে করা সম্ভব হয়নি, এ ছাড়া অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ১২০/১৩০ টাকা করে নিয়ে সবাইকে এক সাথে নিয়ে আয়োজন করছে, আরও একটি বিষয় হলো হলের বিষয়ে আয়োজন করতে গেলে বাকিরা বঞ্চিত হবে এই বিষয়েও প্রশ্ন উঠবে।মূলত এই তিনটি কারনেই সবাইকে নিয়ে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি"।



banner close
banner close