বসুন্ধরা গ্রুপের আর্থিক সহায়তা গ্রহণ, ‘কোরামতন্ত্র’-নির্ভর স্বৈরাচারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং ‘জুলাই চেতনার বিকৃতি’র অভিযোগ এনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) থেকে পদত্যাগ করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান সমন্বয়ক মো. নুর নবী।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে সংগঠন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
নুর নবী বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। কোরামতন্ত্রের মাধ্যমে স্বৈরাচারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, আর্থিক অনিয়ম এবং বিতর্কিত ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে সংগঠন পরিচালিত হচ্ছে। এসব নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে আমি বাগছাস থেকে পদত্যাগ করছি।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের সময় মাঠে সক্রিয় থাকা অনেক সংগ্রামী, যারা গুম ও গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন, মতভেদের কারণে তাঁদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। বরং সংগঠন পরিচালিত হচ্ছে মন্ত্রিপাড়া-নির্ভর অফিসকেন্দ্রিক কাঠামোয়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জগন্নাথ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্রদের অবদানকে অবহেলা করা হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে নুর নবী বলেন, “বসুন্ধরার মতো বিতর্কিত একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর আর্থিক সহায়তায় অনুষ্ঠান আয়োজন করে সংগঠনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। 'ছাত্রশক্তি' নামে একটি অভ্যন্তরীণ কোরাম গঠন করে সংগঠনের যাবতীয় সিদ্ধান্ত ও প্রতিনিধিত্ব নিজেদের হাতে নিয়েছে কিছু নেতৃত্ব। যা গণতন্ত্রবিরোধী এবং স্বৈরাচারী প্রবণতার পরিচায়ক।”
তিনি আরও দাবি করেন, “এই কোরাম নেতৃত্ব ‘জুলাই বিপ্লব’কে ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রচার-প্রচারণার হাতিয়ার বানিয়েছে। এতে জাতীয় ঐক্যের জায়গায় তৈরি হয়েছে বিভাজন। ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে প্রকৃত সংগ্রামীদের ভূমিকা আড়াল করা হচ্ছে।”
সবশেষে তিনি বলেন, “আমি গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের আদর্শে বিশ্বাসী ছিলাম ও থাকব। তবে বাগছাসের বর্তমান নেতৃত্বের অংশ হয়ে থাকা আর সম্ভব নয়। তাই সংগঠন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করছি এবং একটি আদর্শিক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের নতুন সূচনার আহ্বান জানাচ্ছি।”
আরও পড়ুন:








