সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩ পৌষ, ১৪৩২

কুড়িগ্রামে জামাই-শ্বশুরের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

সুজন মাহমুদ, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই, ২০২৫ ১৮:৩৮

শেয়ার

কুড়িগ্রামে জামাই-শ্বশুরের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ
ছবি বাংলা এডিশন

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাউনিয়ারচর গ্রামে ‘জাউনিয়ারচর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ে’ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইসমেজাহান ওরফে রিতা বাদী হয়ে রাজীবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগপত্রে সহকারী শিক্ষক মোছা. হাসনা হেনা, মালেকা বেগম, মরিয়ম বেগম, রেহেনা বেগম, লিপি বেগম, ইউসুফ আলী, অফিস সহায়ক ওলি আহমেদ এবং ভ্যানচালক ইব্রাহিমকে সহ-বাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, বদরপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার এবং বহিষ্কৃত জামায়াতকর্মী আনিছুর রহমান ও তার ভাতিজী জামাতা মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল পরিকল্পিতভাবে বিদ্যালয়ের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে আনিছুর রহমান ও মোয়াজ্জেম হোসেন জনপ্রতি ৩-৪ লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিয়োগ দেন। এরপর শিক্ষকরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করলেও ২০১৯ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।

বন্ধ অবস্থায় বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র গোপনে সরিয়ে ফেলার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা কোনো বেতন-ভাতা পাননি। তারা নিয়োগ বাবদ দেওয়া অর্থ ফেরত চাইলে আনিছ ও বাবুল বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করেন।

সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন "বাংলা এডিশনে" প্রকাশিত হলে চলতি মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোর রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা বিদ্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘর, চেয়ার-টেবিল-বেঞ্চ এবং ষ্টিলের আলমারিতে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ রেজিস্ট্রার ও গোপন নথিপত্র পুড়ে যায়।

খবর পেয়ে শিক্ষকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান সবকিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক ইসমেজাহান ওরফে রিতা বলেন, “চাকরির আশ্বাসে আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় আমরা টাকা ফেরত চাইলে নানা তালবাহানা শুরু করে। সংবাদমাধ্যমে এসব তথ্য প্রকাশের পর পরিকল্পিতভাবে আমাদের বিদ্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আমার বিশ্বাস, বিদ্যালয়ের সব তথ্য মুছে ফেলতেই আনিছ ও তার জামাই বাবুল এ কাজ করেছে।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আনিছুর রহমান বলেন, “ওরা ১০ তারিখে অভিযোগ করলো আমরা স্কুল খুলে টাকা নিয়েছি। তাহলে আমি কেন নিজেই আমার নথিপত্র পুড়িয়ে দেব? আমি যেন কিছু প্রমাণ দিতে না পারি, সেজন্য তারাই আগুন দিয়েছে।”

এ বিষয়ে রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”



banner close
banner close