সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৪ পৌষ, ১৪৩২

আবু সাঈদ হত্যার তথ্য বিকৃতি: ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ ঢেকে দিল শিক্ষার্থীরা

বেরোবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯ জুলাই, ২০২৫ ১১:১৭

শেয়ার

আবু সাঈদ হত্যার তথ্য বিকৃতি: ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ ঢেকে দিল শিক্ষার্থীরা
ছবি সংগৃহীত

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিতে নির্মিত ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’-এ ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, স্ট্যাম্পে আবু সাঈদের আত্মত্যাগের প্রকৃত ইতিহাস তুলে না ধরে তা আবেগনির্ভর ও অস্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা শুক্রবার (১৮ জুলাই) সেটি লাল কাপড়ে ঢেকে দেন।

বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে অবস্থিত শহীদ আবু সাঈদ গেটসংলগ্ন স্থানে এই প্রতীকী কর্মসূচিতে অংশ নেন শহীদ আবু সাঈদের ভাই আবু হোসেন, ‘জুলাই আন্দোলন’-এ যুক্ত শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন, আরমান হোসেন, মাহিদ হাসান শাকিল, তুহিন রানা, রিফাত রাফিসহ আরও অনেকে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, ২০২৩ সালের ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর বাস্তব ঘটনা স্ট্যাম্পে উল্লেখ করা হয়নি। তারা বলেন, “আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, অথচ সেটি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এটি আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন ও ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”

এর আগে, শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৬ জুলাই ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’-এর উদ্বোধন করা হয়। এতে লেখা হয়, “রংপুরের ছেলে শহীদ আবু সাঈদ। জালেম ও জুলুমের বিরুদ্ধে যার শির ছিল চির উন্নত... আসমানের দিকে দুই হাত প্রসারিত করে শাহাদাত বরণ করলেন আবু সাঈদ।”

এই বিবরণকে “কবিতার মোড়কে বাস্তবতাকে আড়াল” করার প্রয়াস বলেই মনে করছেন আন্দোলনকারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জুলাই আন্দোলন’ সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, “মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কেবল ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা ছিল, কিন্তু তা গোপনে উদ্বোধন করা হয়। এমনকি কী লেখা হয়েছে, তা উদ্বোধনের আগে প্রকাশ করা হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “স্ট্যাম্পে আবু সাঈদের জন্মতারিখও ভুল দেওয়া হয়েছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সত্য ইতিহাস প্রতিস্থাপন করে বিকৃতি দূর করতে হবে।”

আরেক আন্দোলনকারী তুহিন রানা বলেন, “পুলিশের নির্মম গুলিতে আবু সাঈদের শাহাদাত বিশ্ব দেখেছে, অথচ সেটি স্ট্যাম্পে উল্লেখ নেই। এর প্রতিবাদেই আমরা লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়েছি বিকৃত ইতিহাসকে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, “উদ্বোধনের আগে স্ট্যাম্পটি ঢাকা ছিল, আমরা দেখতে পাইনি। শিক্ষার্থীদের নজরে আনার পর বিষয়টি সংশোধনের চেষ্টা চলছে।”



banner close
banner close