সোমবার

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩ পৌষ, ১৪৩২

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুঁজি করে আ.লীগ ফ্যাসিস্ট রূপ নিয়েছিলো : মির্যা গালিব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ জুলাই, ২০২৫ ১৫:০৮

আপডেট: ১৭ জুলাই, ২০২৫ ১৫:১৩

শেয়ার

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুঁজি করে আ.লীগ ফ্যাসিস্ট রূপ নিয়েছিলো : মির্যা গালিব
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইআরডিসি আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারে কথা বলেন ড. মির্যা গালিব।

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আজ ফ্যাসিস্ট রূপ ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. মির্যা গালিব।

বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (আইআরডিসি) আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের চেতনার ওপর দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ যেভাবে ফ্যাসিবাদী ধারায় প্রবেশ করেছে, তেমনি ভবিষ্যতে জুলাই বিপ্লবের আদর্শকেও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে এনসিপি ফ্যাসিস্ট রূপ নিতে পারে।

ড. গালিব আরও বলেন, ছাত্ররাজনীতি যদি শুধুই মাসেল পাওয়ার বা পেশিশক্তিনির্ভর হয়ে পড়ে, তবে তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আদর্শবিহীন রাজনীতি ছাত্রসমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।

তিনি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ- বাইরের কোনো শক্তি নয় বলেও জানান তিনি।

সেমিনারে ‘জুলাই বিপ্লবকে জাতীয় রাজনীতিতে কেন্দ্রীয় গুরুত্বে আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাইয়ের পেছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের সামনে এগোতে হবে এর ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে। কিছু রাজনৈতিক দল এখনো এই ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেনি, যা দুঃখজনক।

ড. গালিব বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার জরুরি বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে নিজস্ব নেতৃত্ব নির্বাচন অভ্যন্তরীণ নির্বাচনের মাধ্যমে করতে হবে। মনোনয়ন ভিত্তিক নয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কমিটি গঠন করতে হবে।

ভোটের সংস্কৃতি পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, মার্কা দেখে নয়, যোগ্যতা দেখে ভোট দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি নির্ধারণে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান হলো রাজনৈতিক অনিবার্যতা। ’৫২, ’৭১ এর আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা ’২৪শে জুলাইয়ের আরেকটি গণঅভ্যুত্থান দেখলাম। ’২৪ এর নির্বাচনে বাঙালির ভোট দেওয়ার অধিকারকে হরণ করা হয়েছিল তাই এর চূড়ান্ত পরিণতি হলো জুলাই গণঅভ্যুত্থান। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল যুবক, ছাত্র-ছাত্রী এবং নারীরা। এই আন্দোলনের হাত ধরে ফ্যাসিবাদ থেকে এ দেশ মুক্ত হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক সমাজের উত্তরণ ঘটাতে চাই। এ আন্দোলনের সবারই মূল লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদকে পতন করা। আগামীর বাংলাদেশে আমরা প্রচলিত ধারার রাজনীতির সংস্করণ চাই।

তিনি দেশ সংস্করণ সম্পর্কে বলেন, জুলাই বিপ্লবে আপনি অংশ গ্রহণ করেছিলেন এখন নতুন বাংলাদেশ গড়তে আপনাকে অংশগ্রহণ করতে হবে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যদিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গড়তে পারি তবে আমাদের চূড়ান্ত অর্জন সফল হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ২০০৮ সালের নির্বাচন আমরা মতে স্বচ্ছ ছিল না। বিভিন্ন সময়ে আমাদের সুযোগ এসেছে যা আমরা হারিয়েছি তার থেকে শিক্ষা নিয়ে জুলাইয়ের সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের মূলত ভালে শাসক, ভালো লোক ও ভালো নাগরিক দরকার। যাতে ভূমিকা রাখতে পারে আমাদের এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশনগুলো।



banner close
banner close