ঢাবি ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ফের ঢাবি ভিসি, প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। সাম্য হত্যার পর থেকে লাগাতার বিভিন্ন কর্মসূচিতে এসব দাবিতে অনড় রয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফের এসব দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রতিক সাম্য হত্যাকা-ের প্রকৃত রহস্য এখনও উদ্ঘাটিত হয়নি। এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত তথ্য অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর— যা জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। সাম্যর পরিবারও এসব অসঙ্গতির ব্যাপারে অসন্তোষ জানিয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় মাদকের সক্রিয় সিন্ডিকেট এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে, যেখানে ছাত্রলীগের পলাতক সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, সাম্য হত্যার মতো একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভিসির কাছে আবেগ প্রকাশ করলে, তিনি যে অপেশাদার আচরণ করেছেন, তা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের পক্ষ হয়ে একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী অনলাইনে সাম্য, তার পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে— যা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ।
ছাত্রদলের দাবি, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল সাম্য হত্যাকা-কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন থেকে আলাদা করে দেখতে চাচ্ছে, যাতে প্রশাসনের ব্যর্থতা আড়াল হয়। তবে ছাত্রদল জানায়, তারা সবসময় গঠনতন্ত্র সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে।
গণেশচন্দ্র রায় বলেন, ২৪ জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা একটি নিরাপদ ক্যাম্পাসের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু প্রশাসন সে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিরাপদ ক্যাম্পাস আমাদের মৌলিক অধিকার। হাজারো ছাত্র-জনতার ত্যাগের বিনিময়ে গঠিত এই প্রশাসন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। এই ব্যর্থতা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায় না।
শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ফ্যাসীবাদ বিরোধী দীর্ঘ সংগ্রামে যেসব তরুণটা রক্ত দিয়েছে, শ্রম দিয়েছে, যাদের দীর্ঘ ত্যাগ তিতিক্ষার মাধ্যমে আজকের এই নতুন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি তাদের এক সম্মুখ সারির যোদ্ধা ছিল শহীদ শাহরিয়ার আলম সাম্য। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ সময়ে যেই ক্যাম্পাসে একটা হত্যা হয়নি, ৫ আগস্টের পর যে নিরাপদ ক্যাম্পাস বিনির্মানে আমরা সংগ্রাম করে আসছি সেই ক্যাম্পাসেই সন্ত্রসের ছুরিকাঘাতে সাম্যকে জীবন দিতে হয়েছে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান খোন্দকার অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন শাওন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আখতার শুভ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খানসহ আরো অনেকে।
আরও পড়ুন:
