
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবাসিক হলসহ ১২টি স্থাপনার নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ইফতিখারুল আলম মাসউদ।
এদিকে নতুন নামকরণের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আলম মাসউদ হোয়াটসঅ্যাপে এক বার্তায় জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি স্থাপনার মধ্যে কিছু স্থাপনার পুনঃনামকরণ, পরিবর্তন ও নতুন নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়া নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা হল এবং শহীদ কামারুজ্জামান হলের নাম চালুর আগে পরিবর্তন করা হবে। কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এখন পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের পরিবর্তে ‘জুলাই-৩৬ হল’, সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের পরিবর্তে ‘প্রশাসন ভবণ-১’, মনসুর আলী প্রশাসন ভবনের পরিবর্তে ‘প্রশাসন ভবন-২’, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের পরিবর্তে ‘সিনেট ভবন’ নামকরণ করা হয়েছে।
এছাড়া শেখ কামাল স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম’, ড. কুদরত-ই-খুদাে একাডেমিক ভবনের পরিবর্তে ‘জাবির ইবনে হাইয়ান ভবন’, ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের পরিবর্তে ‘জামাল নজরুল ভবন’, কৃষি অনুষদ ভবনের পরিবর্তে ‘কৃষি ভবন’, শেখ রাসেল মডেল স্কুলের পরিবর্তে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মডেল স্কুল’, কাজলা গেটের পরিবর্তে ‘শহীদ সাকিব আঞ্জুম গেট’ এবং বিনোদপুর গেটের পরিবর্তে ‘শহীদ আলী রায়হান গেট’ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি আবাসিক হল ও একটি স্কুলের নামফলক ভেঙে নতুন নামকরণ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা সব নামফলক, গ্রাফিতি ও দেয়াললিখন মুছে দিতে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
ওই সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’, নির্মাণাধীন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলের পরিবর্তে ‘শহীদ আলী রায়হান হল’, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে ‘ফাতিমা আল-ফাহরিয়া হল’ ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের পরিবর্তে ‘নবাব ফয়জুন নেসা চৌধুরানি’ নাম দিয়ে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। এছাড়া শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে ‘রিয়া গোপ মডেল স্কুল’ নাম দেন তারা।
এদিকে নতুন নামকরণের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে সাফায়েত মোস্তাকিম অনিক নামের একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘ড. কুদরত-ই-খুদা এই দেশের একজন পথিকৃৎ বিজ্ঞানী ছিলেন। ইবনে হাইয়ান হিস্টোরিক্যাল ফিগার কিন্তু এক্ষেত্রে নাম পরিবর্তনটা একদমই বেখাপ্পা লাগছে। ড. ওয়াজেদও সর্বজন সম্মানিত ছিলেন। আর গেটগুলোর নাম মানুষ ওই বিনোদপুর, কাজলা গেটই বলবে, অযথা কন্ট্রোভার্সি ক্রিয়েট করা। এছাড়া আরও অনেকেই নাম পরিবর্তনের এই ইস্যুতে ব্যাপক সমালোচনা করেন।
আরও পড়ুন: