মঙ্গলবার

১৩ মে, ২০২৫
২৯ বৈশাখ, ১৪৩২
১৫ জিলক্বদ, ১৪৪৬

জবির বাজেট ও আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১২ মে, ২০২৫ ২২:০৩

শেয়ার

জবির বাজেট ও আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ
ছবি : বাংলা এডিশন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বাজেট বৃদ্ধি ও আবাসন ভাতা প্রদানের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘদিনের অবহেলিত দাবিগুলো বাস্তবায়নে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এক কণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়ে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
 
সোমবার  বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্ত্বরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে গেটলক কর্মসূচি ও ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করেন। এসময় তারা চার দফা দাবি পেশ করেন।
 
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো– ১. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে এবং ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ২. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এবং পুরান ঢাকার ড. হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ আগামী ১০ মে ২০২৫-এর মধ্যে শুরু করতে হবে। ৩. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হল ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রতি ১৫ দিন অন্তর মুক্তমঞ্চে এসে অবহিত করতে হবে। ৪. আগামী ১৫ মে ২০২৫-এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
 
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট সমন্বয়ক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন, প্রোক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
 
সমাবেশে বক্তারা জানান, বর্তমান অবকাঠামো ও বাজেট শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত নয়। দীর্ঘদিন ধরে আবাসন সংকটে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা, যা দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি আবাসন ভাতা চালুর দাবি জানান তারা।
 
বাংলা বিভাগের ১০ম আবর্তনের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হুসাইন মুন্না বলেন, "জবির অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে আমরা দীর্ঘদিন অবহেলিত রয়েছি। ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমরা রাজপথে নেমেছি এবং সামনে আরও তীব্র আন্দোলন হবে, ইনশাআল্লাহ।"
 
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী নূর নবী বলেন, “প্রতিটি স্তরেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় ও সচিবালয়ে এমন কিছু স্বৈরাচারী দোসর বসে আছে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে জবির বাজেট আটকে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১১টি হলের কথা বলা হলেও বাস্তবে সেগুলো বিভিন্ন গোষ্ঠীর দখলে। প্রশাসন এখনও এসব হল বা জমি উদ্ধার করতে পারেনি। বলা হচ্ছে, জমিগুলো ভেস্টেড প্রপার্টি (ভিপি), যেখানে নির্মাণের অনুমতি নেই। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক হলই ভিপি জমিতে গড়ে উঠেছে। এই বৈষম্যের জবাবদিহিতা আমাদের কাছেই করতে হবে।”
 
জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, "সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির পাশে সবসময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল থাকবে।"
 
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, "ভিক্ষা চাইতে আসিনি, ন্যায্য অধিকার চাইতে এসেছি। এবার দাবি পূরণ না হলে শিক্ষক সমিতি থেকে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন কর্মসূচি দেওয়া হবে।"
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন বলেন, "আমরা বারবার আশ্বাস দিই, তবে অনেক সময় তা বাস্তবায়ন হয় না। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে আমি একাত্মতা প্রকাশ করছি।"
banner close
banner close