জমি কেনার সময় জাল এনআইডি, নকল পাওয়ার-অফ-অ্যাটর্নি বা ভুয়া দলিলের ফাঁদে পড়ে অনেকে বড় আর্থিক ক্ষতির শিকার হন। নিরাপদ ক্রয় নিশ্চিত করতে এখনই জোরালো দলিল যাচাই অপরিহার্য।
ঢাকার ডেমরার সহকারী ভূমি কমিশনার মো. আসাদুজ্জামানের সতর্কবাণী অনুসারে, যে জমির কোনো তদারকি নেই, সেই জমিই বেশি ঝুঁকিতে পড়ে তাই নিচের ৯টি কৌশল মেনে চলুন এবং নিরাপদে জমি ক্রয় করুন।
প্রধান ৯টি যাচাইকরণ কৌশল
ভলিউম-রেজিস্ট্রি নম্বর পরীক্ষা করুন — সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ডের সঙ্গে দলিলের সাল, ভলিউম ও রেজিস্ট্রি নম্বর মিলিয়ে দেখুন। প্রয়োজনে লিখিত দরখাস্ত দিন।
স্বাক্ষর ও সরকারি সিল যাচাই করুন — স্বাক্ষরের মিল এবং সরকারি সিল অনুপস্থিত/অস্বাভাবিক হলে সতর্ক হোন। সরকারি ছুটির দিনে রেজিস্ট্রি হওয়া দলিল সন্দেহজনক হতে পারে।
প্রকৃত মালিক নিশ্চিত করুন — স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে, পুরনো খতিয়ান দেখে প্রকৃত মালিক শনাক্ত করুন; একই জমিতে একাধিক মালিক দেখালে বেশি সতর্ক হন।
নামজারি ও খতিয়ান পরীক্ষা করুন — সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে খতিয়ান ও নামজারির ধারাবাহিকতা পরীক্ষা করুন (দাগ নম্বর, পরিমাণ, সীমা)।
আমমোক্তারনামায় ছবি আছে কি না দেখুন — পাওয়ার-অফ-অ্যাটর্নি থাকলে উভয় পক্ষের ছবি আছে কিনা খতিয়ে দেখুন; ফটো না থাকলে সন্দেহ বাড়ে।
দলিলের তারিখ ও দখল হস্তান্তর মিলিয়ে দেখুন — দলিলের তারিখ ও জমির দখল হস্তান্তরের সময়সূত্র সঙ্গতিপূর্ণ কি না নিশ্চিত করুন।
দলিল লেখকের তথ্য যাচাই করুন — দলিল প্রস্তুতকারী (লেখক) কে তা জানুন; প্রয়োজন হলে সরেজমিন গিয়ে তথ্য মিলান।
পুরনো দলিল ও মালিকানা যাচাই করুন — পুরনো ভায়া দলিল, উত্তরাধিকারনামা, করার রশিদ ইত্যাদি বিক্রেতার কাছ থেকে নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মিলান।
স্ট্যাম্প উৎস ও সিরিয়াল নম্বর দেখুন — ব্যবহৃত স্ট্যাম্প কোথা থেকে কেনা হয়েছে এবং সিরিয়াল নম্বর সঠিক কি না যাচাই করুন।
জমি কেনা জীবনের একটি বড় বিনিয়োগ এবং এতে জাল দলিল ও নকল এনআইডির ফাঁদে পড়ার ঝুঁকি কম নয়। তবে সতর্কতা ও সঠিক যাচাই প্রক্রিয়া মেনে চললে আপনি এই ঝুঁকি অনেকটা কমিয়ে আনতে পারেন। ভলিউম-রেজিস্ট্রি নম্বর, খতিয়ান ও নামজারি, মালিকানা যাচাই, দলিলের স্বাক্ষর ও সিল পরীক্ষা, পুরনো দলিল সংগ্রহ—এই সব কৌশলগুলো আপনাকে নিরাপদ লেনদেনে সহায়তা করবে। প্রয়োজন হলে অভিজ্ঞ আইনজীবী ও স্থানীয় ভূমি অফিসের সাহায্য নিন।
মূল কথাটি হলো, একাধিক স্তরে যাচাই না করা পর্যন্ত জমি কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন না। সচেতনতা ও সঠিক প্রস্তুতি আপনাকে অনেক টাকার ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে এবং জমি ক্রয়কে নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত করবে।
আরও পড়ুন:








