বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে দেওয়া প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকার বিশেষ সহায়তা ফেরত নেওয়ার পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত করেছে। নতুন একীভূত ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অর্থ পুনরুদ্ধার করা হবে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে জানা যায়, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক—এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের একীভূতকরণের প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে। নতুন ব্যাংকটি হবে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’। এর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং একীভূতকরণের নকশা তৈরি চলছে।
বর্তমানে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে যে, সহায়তা ফেরত নেওয়ার চাপ সৃষ্টি করলে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই এই মুহূর্তে ব্যাংকগুলোর সম্পদ–দায় পর্যালোচনা, মূলধন কাঠামো ঠিক করা ও আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে এই ব্যাংকগুলোকে রিফাইন্যান্স স্কিম, রেপো সুবিধা এবং বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে ৩৪ হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া হয়। এই অর্থের বড় অংশ ব্যয় হয়েছে গ্রাহকদের আমানত ফেরত ও দৈনন্দিন কার্যক্রমে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকগুলোর সংকটের প্রধান কারণ হিসেবে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর আধিপত্য, ঋণ বিতরণে শিথিলতা এবং দুর্বল করপোরেট গভর্ন্যান্সকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে মূল লক্ষ্য হল ব্যাংকগুলোকে স্থিতিশীল করা। একীভূত ব্যাংক কার্যক্রম শুরু হলে তখনই হিসাব মিলিয়ে সহায়তা পুনরুদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী দুর্বল ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাব থেকে নতুন জমা অর্থ ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করা হতো। তবে সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে এই নিয়ম শিথিল করা হয়েছে, যাতে ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পারে।
এভাবে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিগতভাবে ব্যাংকগুলোর স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য আরও সময় ও সুযোগ দিচ্ছে, যাতে তারা অর্থনৈতিকভাবে পুনরুদ্ধার হতে পারে।
আরও পড়ুন:








