
বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি, বৈশ্বিক নীতিগত অনিশ্চয়তা এবং আর্থিক বাজারের অস্থিরতার কারণে ২০২৪ সালের অপ্রত্যাশিতভাবে দুর্বল প্রবৃদ্ধির পর দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও মন্থর হচ্ছে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ এই অঞ্চলের দেশগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাংক।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস, জুন ২০২৫ শীর্ষক প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনে জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি ভারতের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। যা মূলত চাহিদা অনুযায়ী বিনিয়োগে মন্দা এবং সরবরাহের দিক থেকে শিল্প উৎপাদনে গতিকে প্রতিফলিত করে। তবে নির্মাণ ও পরিষেবা খাতের প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল ছিল এবং গ্রামীণ এলাকার শক্তিশালী চাহিদার কারণে কৃষি উৎপাদন পূর্বের তীব্র খরা পরিস্থিতি থেকে পুনরুদ্ধার হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি ২০২৪/২৫ অর্থবছরে (জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫) ৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যা মূলত ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিকূল প্রভাবকে প্রতিফলিত করে। এ ছাড়া উচ্চ অনিশ্চয়তা এবং কাঁচামালের বর্ধিত মূল্য বেসরকারি বিনিয়োগে বাধা দিয়েছে। একই সঙ্গে মূলধনী পণ্যের আমদানি কমে যাওয়ায় শিল্প উৎপাদনও হ্রাস পেয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৭ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হয়েছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উন্নতি, ব্যবসা পরিবেশ শক্তিশালীকরণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সংস্কারের সফল বাস্তবায়নের ওপর ভিত্তি করে বিনিয়োগ পুনরুদ্ধারের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। রেমিট্যান্সের স্থিতিশীল প্রবাহ এবং মুদ্রাস্ফীতি কমে আসার কারণে বেসরকারি ভোগ ব্যয় শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের দুর্বল প্রবৃদ্ধি এবং উচ্চ বাণিজ্য বাধার কারণে রফতানি কার্যক্রমে মন্দা দেখা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: