শুক্রবার

৩০ মে, ২০২৫
১৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
৪ , ১৪৪৬

বাণিজ্যিক বাজারে 'ফোর্টিফাইড আটার' সম্ভাবনা ও প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৮ মে, ২০২৫ ১৬:১৫

শেয়ার

বাণিজ্যিক বাজারে 'ফোর্টিফাইড আটার' সম্ভাবনা ও প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে আলোচনা
ছবি : বাংলা এডিশন

বাংলাদেশে ভিটামিন ও খনিজ লবণের ঘাটতির বিরুদ্ধে লড়াই আরও শক্তিশালী করতে TechnoServe Inc. ও Millers for Nutrition-এর যৌথ উদ্যোগে ২৮ মে , ঢাকার গুলশানের লেকশোর হাইটসে আয়োজিত হলো এক প্রেরণামূলক কর্মশালা। “বাংলাদেশের বাণিজ্যিক বাজারে ফোর্টিফাইড গমের আটা প্রবর্তনের প্রযুক্তি ও উপকারিতা” শীর্ষক এই কর্মশালায় অংশ নেন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, মিল মালিক, খাদ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞসহ মোট ৪৬ জন প্রতিনিধি।কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে ভিটামিন ও খনিজ লবণের এর ঘাটতি, যা বিশেষ করে নারী ও শিশুদের মাঝে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে, তা দূর করতে গমের আটায় পুষ্টি উপাদান সংযোজনের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা তুলে ধরা।

TechnoServe-এর কান্ট্রি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. গুলজার আহম্মেদ উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ঘাটতির কারণে দেশে লাখো মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। প্রযুক্তি ও সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকলে, এই সমস্যা সহজেই সমাধানযোগ্য।” তিনি সরকারি, বেসরকারি এবং উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের ওপর জোর দেন।

প্রধান অতিথি, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জামাল হোসেন বলেন, “ফোর্টিফাইড গমের আটা শুধু পুষ্টির নিশ্চয়তা দেয় না, এটি একটি টেকসই জনস্বাস্থ্য কৌশল।” তিনি আরও বলেন, “এখন সময় এসেছে এটিকে বাণিজ্যিকভাবে প্রসারিত করার, কারণ জনগণ এখন স্বাস্থ্য সচেতনতার দিক থেকে অনেক এগিয়ে গেছে।বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর উপপরিচালক এস. এম. আবু সাঈদ বলেন, “তিনি আশাবাদী যে গমের ফোর্টিফিকেশন সফলভাবে বাস্তবায়িত হবে”। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে ফোর্টিফাইড আটার মান নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মনীতি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

TechnoServe-এর সিনিয়র ফুড ফোর্টিফিকেশন স্পেশালিস্ট মো. নাঈম জোবায়ের তাঁর মূল প্রবন্ধে বলেন, “গমের আটায় পুষ্টি উপাদান সংযোজন একটি সহজ, ব্যয়সাশ্রয়ী এবং টেকসই সমাধান। এটি কেবল স্বাস্থ্য উন্নয়ন নয়, অর্থনীতিতেও দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।” তিনি প্রযুক্তিগত দিক, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং উদ্ভাবনের জায়গাগুলো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেন।

কর্মশালায় একটি মুক্ত আলোচনায় মিল মালিক, খাদ্য শিল্প প্রতিনিধি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকারীরা সরকার ও উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেন। আলোচনায় অংশ নেন , BASF ও Müllen Chemie-এর প্রতিনিধি এবং WFP (World Food Programme) , Nutrition International (NI) ও (Global Alliance for Improved Nutrition) GAIN-এর মতো উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তারা। ACI Foods Ltd.-এর চিফ বিজনেস অফিসার ও Millers for Nutrition-এর গ্লোবাল মিলারস অ্যাডভাইজরি গ্রুপের সদস্য ফারিয়া ইয়াসমিন বলেন, “পুষ্টি নিশ্চিত করা শুধু দায়িত্ব নয়—এটি একটি সামাজিক অঙ্গীকার।”

সমাপ্তি বক্তব্যে মো. গুলজার আহম্মেদ অংশগ্রহণকারীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, “এই কর্মশালা একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে যেখানে প্রযুক্তি, নীতি ও প্রতিশ্রুতি একসাথে হয়ে দেশের পুষ্টি ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করবে।” এই কর্মশালা ছিল একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ, যা বাংলাদেশে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক খাদ্য ফোর্টিফিকেশন কর্মসূচির প্রসারে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।

banner close
banner close