মঙ্গলবার

১৭ জুন, ২০২৫
৪ আষাঢ়, ১৪৩২
২১ , ১৪৪৬

দিল্লি ছাড়া কোথাও ঠাই হচ্ছে না হাসিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৯:৪০

আপডেট: ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০৪

শেয়ার

দিল্লি ছাড়া কোথাও ঠাই হচ্ছে না হাসিনার
সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

মাত্র কদিন আগেও যিনি ছিলেন বাংলার প্রতাপশালী ও ক্ষমতাধর প্রধানমন্ত্রী, সেই তিনিই কিনা প্রতিবেশী দেশে মানবেতর জীবন যাপন করছেন!

বলছি বাংলার ইতিহাসে এক কুখ্যাত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার কথা। রক্তের হলিখেলায় মেতে থাকা সাবেক এই নারী শাসক আপাতত চার দেয়ালের মধ্যে গৃহবন্দী অবস্থায় বসবাস করছেন। শোনা যাচ্ছে, তার একমাত্র সঙ্গী একটা টেলিফোন। এর বাইরে তার কাছে আর তেমন কিছুই নেই।

বাংলার ইতিহাসে শেখ হাসিনার নামটা অবশ্যই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে, সেটা এ দেশের সাধারণ মানুষের কাছে ঘৃণার নাম হিসেবে। একটা মানুষ কি পরিমাণে দমন পীড়ন চালালে সেই মানুষটার প্রতি দেশের সকল শ্রেণীর মানুষের ক্ষোভ ও ঘৃণা জন্ম নেয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

যাইহোক শেখ হাসিনা ভারতে এক প্রকার আত্মগোপনেই রয়েছেন। কারণ, ভারত সরকার এখনো তার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এজন্য তার সঙ্গে কারোরই দেখা করার সুযোগ নেই। এমনকি নিজের কন্যা সায়মা ওয়াজেদেরও না।

হাসিনার দেশত্যাগ এবং দিল্লির কাছের একটি সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পর প্রায় এক মাস হতে চলেছে। দীর্ঘদিনের এই মিত্রকে নিয়ে এখন উভয়সঙ্কটে রয়েছে নরেন্দ্র মোদির ভারত সরকার।

ভারতে কিছুদিনের জন্য থাকতে চেয়েছিলেন হাসিনা। কিন্তু যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় পেতে ব্যর্থ হয়ে বাধ্য হয়েই ভারতে রয়েছেন তিনি।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার হাসিনার ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় ভারতে এখন তার অবস্থানের বৈধ ভিত্তিটা কী, সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। এই পটভূমিতে দিল্লিতে ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে বৃটিশ গণমাধ্যম বিবিসি যেটা আভাস পেয়েছে, তা হলো এই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের সামনে কার্যত তিনটি রাস্তা খোলা আছে।

প্রথম রাস্তাটা হলো, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য তৃতীয় কোনও দেশে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা। হাসিনাকে মিত্র কোন দেশে পাঠানোর পরিকল্পনা ভারত সরকার সেই শুরু থেকেই করে আসছে। কিন্তু তাতে আশানুরূপ ফলাফল অর্জিত হয়নি।

এর কারণ ইউরোপ-অ্যামেরিকা কিংবা গণতান্ত্রিক কোনো দেশই এমন একটা স্বৈরশাসককে আশ্রয় দিয়ে নিজেদের ইমেজ নষ্ট করতে আগ্রহী নয়। পাশাপাশি হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া মানে কুটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

দ্বিতীয় অপশনটা হলো, শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে ভারতেই রেখে দেয়া। আর তৃতীয় পথটা হলো তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা।

এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলানো তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, যদি আদালতের নির্দেশ আসে, তাহলে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরানোর জন্যে চেষ্টা করা হবে।

৫ আগস্টের পর থেকে বর্তমানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক খুনের মামলাসহ ১০০টিরও বেশি মামলা করা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, যদি তৃতীয় কোনও দেশ শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিতে রাজিও হয়, তাহলে কোন পাসপোর্টে তিনি দিল্লি থেকে সেখানে সফর করবেন? তাই বলা চলে শেখ হাসিনার ঠাই দিল্লি ছাড়া কোথাও মিলছে না।

banner close
banner close